
যে কাঠগড়ায় তুমি দাঁড়িয়ে আছো তা কোনো প্রচলিত কাঠগড়া নয়
এ এক মানবিক কাঠগড়া , অলৌকিক আলোয় নির্মিত ।
যদিও জানি পৃথিবীর কোনো কাঠগড়ায়ই তোমাকে তোলা হবে না
কারণ তোমার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে মহীরুহ , অটল পাহাড় ।
প্রচলিত সমস্ত আইনকেই তুমি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছো
কী অনায়াসে তুমি ভুলে গেছো মুজেসের মুখ
ধুলোয় লুটিয়ে পড়ছে তাওরাত
তালমুদ গড়িয়ে পড়ছে আর
প্রিস্টের ঠোঁটের কোণে ফেনিয়ে উঠছে রক্তের বুদবুদ ।
এ কোনো বীরত্ব নয়
এ অন্য এক হোলোকাস্ট , শুধুই নিধনযজ্ঞ ।
তুমি যা করছো তা শুধু কাপুরুষেরাই পারে ।
নারী ও শিশুকে তুমি রেহাই দাওনি
বরং তাদেরই তুমি যূপকাষ্ঠে চড়িয়ে দিয়েছো
বলো , কীভাবে তুমি নিন্দে করবে হোলোকাস্ট !
নিন্দে করবে গ্যাস-চেম্বার , বীভৎস মৃত্যুর বিভীষিকা !
তুমি কোনো আশ্রয়কেন্দ্র মাননি
কোনো সংঘ কোনো বিদ্যাপীঠ মাননি
তুমি দেখিয়ে যাচ্ছো কাপুরুষ বিমানের লেজ , বোমা ও স্প্লিন্টার
এ কোনো যুদ্ধ নয়
এ শুধু গণহত্যা ! গণহত্যা ! এবং গণহত্যা !
যারা ইতোমধ্যেই পৃথিবীর মোড়ল সেজেছে
যারা সংঘেরও নেপথ্যে
তারা ধূর্ত , ধামাধরা
শেয়ালের মতো লেজ নুইয়ে আছে ।
আজ যে শকুন উড়ছে আকাশে
তার ঠোঁট থেকে চঞ্চু থেকে যে বিষ নামছে পশ্চিম তীরে , গাজায়
তার হলাহলে একদিন তুমিও জর্জরিত হবে , জেনে নিও ।
যে হাস্যোজ্জ্বল শিশুরা , স্নেহার্দ্র মায়েরা
রূপান্তরিত হলো সমাধিফলকে
যে তরতাজা জীবন্ত হৃদপিণ্ড তুমি থামিয়ে দিলে
তাদের আত্মার চিৎকার ও অভিশাপে
ভারি হয়ে উঠছে আকাশ , স্তব্ধ হয়ে আছে বাতাস ।
তুমি যেন পাথুরে কুঁদুলে মুখ
নির্লিপ্ত সীমারের মতো হত্যায় মেতেছো
তুমি কী দেখছো ককিয়ে উঠছে পাহাড় , তূর ?
ককিয়ে উঠছে ফারাওয়ের মমি-মুখ ।
তুমি কি জানো
আজ ফের হিটলার , হালাকু কি চেঙ্গিসের ভূমিকায়
নেমেছে বনী ইসরাইলের বংশধর ।
ক্ষোভে , অন্ধ যন্ত্রণায়
পিতৃহীন বালকের , স্বামীহীন বিধবার
আর্তনাদও থমকে আছে সীমাহীন নিষ্ঠুরতার বিবরে
বিস্ময়ের অধিক কোনো বিস্ময়ে ওরা দেখছে
বিবর্তিত মানুষ কীভাবে দানব হয়ে উঠছে ।
দু:খে
কান্নায়
আর্তনাদে
বিবমিষায়
ক্রমশ স্তব্ধ হতে থাকে-- হয়ে থাকে গাজার বাতাস ।