
নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ‘আমেরিকান কারি অ্যাওয়ার্ড’। খলিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ ও আশা গ্রুপের যৌথ আয়োজনে সিটির টেরেস অন দ্য পার্ক মিলনায়তনে ২৪ মে এই অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
ব্যতিক্রমী রন্ধনশিল্পের এই আয়োজন ঘিরে অনুষ্ঠানটি ছিলো উৎসবমুখর। মূল প্রতিপাদ্য ছিল- ‘এবার আপনিও হবেন শেফ’।
অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের বিখ্যাত শেফ, জর্জিয়া ষ্টেট সিনেটর বাংলাদেশি-আমেরিকান শেখ রহমানসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, ভারত, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, জর্ডান ও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের শেফ ও রন্ধন বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। বাংলাদেশ থেকে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন কনটেন্ট নির্মাতা আদনান ফারুক হিল্লোল, ইউটিউবার ইফতেখার রাফসান ও ফুড ব্লগার নুসরাত ইসলাম।
থিম সংয়ের মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা, খলিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ-এর কর্ণধার ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন অ্যাওয়ার্ড’ প্রাপ্ত শেখ খলিলুর রহমান ও আশা গ্রুপের কর্ণধার ইঞ্জিনিয়ার আকাশ রহমান।
বক্তারা বলেন, আমরা এই প্ল্যাটফর্মকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে নিতে চাই। শেফদের সম্মান ও উৎসাহ দিতেই এই আয়োজন। সবার সহযোগিতা পেলে আগামীতে আরো ব্যাপক আয়োজনে ‘আমেরিকান কারি অ্যাওয়ার্ড’ অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দেন তারা।
শেফ খলিলুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে কারি-নির্ভর রন্ধনশিল্পের ক্রমবর্ধমান প্রসারকে সম্মান জানাতেই এ আয়োজন। এবারের অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ এশীয় রন্ধনশিল্পের উপস্থিতি তুলে ধরা হয়। ইঞ্জিনিয়ার আকাশ রহমান বলেন, এশিয়ান খাবারের সংস্কৃতি, স্বাদ ও সৃজনশীলতাকে একসঙ্গে তুলে ধরতেই এই উদ্যোগ। এটি অভিবাসী সমাজে বিশেষ করে দক্ষিণ এশীয় রন্ধন ঐতিহ্যের তাৎপর্যকে আরও দৃঢ় করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এবারের ‘আমেরিকান কারি অ্যাওয়ার্ড’ আয়োজনে ৮টি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে রেস্টুরেন্ট শেফ ও হোম শেফদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়াও কয়েকজন সম্পাদক ও সাংবাদিককে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। প্রথমেই পুরষ্কার তুলে দেয়া হয় ‘বেষ্ট হোম শেফ’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের অ্যাওয়ার্ড।
অনুষ্ঠানে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় শেফ টনি করিম খান-কে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এছাড়াও বেস্ট কারি রেস্টুরেন্ট, বেস্ট শেফ, বেস্ট হোম শেফ, বেস্ট এন্টারপ্রোনিউর, কারি লিজেন্ড অ্যাওয়ার্ড, শেফ অব দ্য ইয়ার, পারসনালিটি অব দ্য ইয়ারসহ ৮টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জিতেছেন ৩০ জন।
আমেরিকান কারি অ্যাওয়ার্ডসের জুরি বোর্ডে ছিলেন জনপ্রিয় শেফ টনি করিম খান, ভারতের বিশিষ্ট রন্ধন বিশেষজ্ঞ ও কালিনারি ফোরামের সদস্য ড. ইজ্জত হুসেন, মালয়েশিয়ান কালিনারি বিশেষজ্ঞ রসাহম বিন রুসলি, সৌদি আরবে ওয়ার্ল্ড কালিনারি অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউএসি) এর সার্টিফাইড প্রশিক্ষক মুনতাসির মাসউদ, বাহরাইনের বিখ্যাত কালিনারি বিশেষজ্ঞ ও হসপিটালিটি কনসালটেন্ট সিলভারস্টার রোজারিও, জর্ডানের পেশাদার কালিনারি বিশেষজ্ঞ মাহমুদ ইয়াসিন, বৃটিশ-বাংলাদেশী ক্যাটারিং ব্যবসায়ী অলি খান এমবিই, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির কালিনারি এন্ড হসপিটালিটি বিভাগের অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর মো. গোলাম মোস্তফা, বাংলাদেশের নারী উদ্যোক্তা, রন্ধনশিল্পী ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব রাহিমা সুলতানা রীতা প্রমুখ।
কয়েক ধাপে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কের জনপ্রিয় হোটেল-রেস্টুরেন্ট, গৃহিণী, শেফ ও ফুড ব্লগাররা অংশগ্রহণ করেন। আয়োজক কর্তৃপক্ষের দাবী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড খ্যাত’ জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী বেবী নাজনীন এবং কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সহ ৫ শতাধিক আমন্ত্রিত অতিথির উপস্থিতিতে মূল অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মিলনমেলায়। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন নিউজ প্রেজেন্টার সাদিয়া খন্দকার। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর নৈশভোজের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
তবে দর্শক-শ্রোতাদের কারো কারো মতে অনুষ্ঠানের সার্বিক আয়োজন ছিলো অগোছালো। উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানের থিম সং নির্মাণ করেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সঙ্গীত পরিচালক তানভীর তারেক। এছাড়াও তানভীর তারেকের সুরে, আসিফ ইকবালের কথায় গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন পপ তারকা মেহরীন ও কন্ঠশিল্পী মার্সেল। গানটির সঙ্গীতায়োজন করেছেন মার্সেল।
চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।