হারারে টেস্টে অবিশ্বাস্য নজির গড়ে দাপুটে একটি দিন কাটিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম দিনটা অম্ল-মধুর কাটলেও সফরকারীদের দ্বিতীয় দিনটা ছিল এক পেশে। বিশেষ করে মাহমুদউল্লাহ ও তাসকিন আহমেদের ১৯১ রানের জুটিতে ভর করে প্রথম ইনিংসে ৪৬৮ রানের বিশাল সংগ্রহ পেয়েছে সফরকারীরা। তাতে এই টেস্টের নিয়ন্ত্রণও এখন মুমিনুলদের হাতে! দ্বিতীয় দিন শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ১ উইকেটে ১১৪ রান। তারা এখনও পিছিয়ে ৩৫৪ রানে। টস হারলেও ব্রেন্ডন টেলর শুরুতে স্বস্তিতে ছিলেন। বাংলাদেশের টপ অর্ডারকে তার দল অনায়াসেই কাবু করে ফেলতে পেরেছিল। ১৩২ রানে ৬ উইকেটের পতনে যখন ভীতিকর এক অবস্থা, ঠিক তখনই চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় প্রতিরোধ গড়েছেন লিটন দাস, তাসকিন আহমেদ ও মাহমুদউল্লাহ। যাদের অসাধারণ টেস্ট ব্যাটিং প্রদর্শনীতেই সমৃদ্ধ হয়েছে স্কোরবোর্ড।
প্রথম দিন ৭ উইকেটে ২৭০ রান পেতে অসামান্য ভূমিকা ছিল লিটন দাসের। খেলা শেষ হওয়ার আগে তার ৯৫ রানের বিদায়ে অস্বস্তি বিরাজ করলেও কেউ তখনও ভাবেনি দ্বিতীয় দিনটায় কী চমক অপেক্ষা করছিল। কিন্তু দ্বিতীয় দিন প্রত্যাশা ছাড়ানো ব্যাটিংয়ে প্রায় দুটি সেশনই কাটিয়ে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও পেসার তাসকিন আহমেদ। দীর্ঘ দিন টেস্ট আঙিনায় সুযোগ না পাওয়া মাহমুদউল্লাহ তো তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন পেসার তাসকিন। শ্রীলঙ্কা সিরিজে বল হাতেই যার নতুন উচ্চতায় উঠা। সেই পেসারও প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানদের দেখালেন- ধৈর্য কোন পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। তাতে ভাগ্যের ছোঁয়া ছিল যদিও। কিন্তু সেই ভাগ্যের ছোঁয়া কমবেশি সুযোগ লাগানই বা কয়জন? যেমনটি পেরেছেন তাসকিন। ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ১৩৪ বল খেলে উপহার দিয়েছেন দারুণ এক ইনিংস। টেস্ট মেজারের অসাধারণ সেই প্রদর্শনীতে কী ছিল না? ১১টি চারে দৃষ্টিনন্দন সব ক্রিকেটীয় শট খেলেছেন। দ্বিতীয় সেশনের শেষভাগে ৭৫ রানে বিদায় না নিলে প্রথম সেঞ্চুরিটাও দেখা পেয়ে যেতে পারতেন। সেটি না হওয়ায় বিশ্বরেকর্ডও গড়া হয়নি মাহমুদউল্লাহ-তাসকিনের। স্লগ করতে গিয়ে তাসকিন বোল্ড হলে ভেঙে যায় ১৯১ রানের অনবদ্য এক জুটি। টেস্টে নবম উইকেটে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ! ১৫০ রানে অপরাজিত থাকা মাহমুদউল্লাহ খেলেছেন ২৭৮ বল। তার ইনিংসে ছিল ১৭টি চারের সঙ্গে একটি ছয়।
জিম্বাবুয়ের হয়ে ৯৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন ব্লেসিং মুজারাবানি। দুটি করে নিয়েছেন ডোনাল্ড তিরিপানো ও ভিক্তর নিয়ুচি। একটি করে নিয়েছেন মিল্টন শুম্বা ও রিচার্ড এনগারাভা। সেই তুলনায় জিম্বাবুয়ের ইনিংসের সূচনাটা ছিল প্রশংসার দাবিদার। সাকিব-তাসকিনরা হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারেননি। তাতে ওপেনিং জুটিতেই উঠে আসে ৬১ রান। শুম্বাকে ৪১ রানে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন ব্যাট হাতে ব্যর্থ সাকিব। এর পর অবশ্য আর বিপদের মুখোমুখি তাদের হতে হয়নি। অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলর (৩৭) ও অভিষিক্ত কাইতানোর (৩৩) জুটিতে নির্বিঘ্নেই পার করে দ্বিতীয় দিন।
চ্যানেল-৭৮৬'এ নিউজ পাঠাতে ই-মেইল করুন [email protected] এই ঠিকানায়। আপনার পণ্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপনের জন্য কল করুন (212) 729-0610 এই নাম্বারে।