Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

‘বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করতে অ্যাম্বাসিগুলোকে অ্যাকটিভ হতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০১:০৬, ১৭ অক্টোবর ২০২৩

‘বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করতে অ্যাম্বাসিগুলোকে অ্যাকটিভ হতে হবে’

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যখনই যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরোপীয় দেশগুলোতে সফরে যান, তখনই সেখানে একটা হাঙ্গামা বাধে। একটি গ্রুপ তাকে স্বাগত জানায়, আরেকটা গ্রুপ প্রতিহতের চেষ্টা করে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরে তেমনটাই দেখা গেছে। এতে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সম্মান ভুলুণ্ঠিত হয়। এই বিষয়টিসহ আরও কিছু ইস্যু নিয়ে চ্যানেল-৭৮৬ এর সঙ্গে কথা বলেছেন গ্লোবাল হেলথ একাডেমির প্রেসিডেন্ট এবং ফোবানার চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান। 

এবার নিউইয়র্কে এসে প্রধানমন্ত্রী কী বলতে চেয়েছেন?
তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরেছেন। কথা বলেছেন ভিসানীতি নিয়ে। এ নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে একটা ভীতির সৃষ্টি হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছেন। জাতি হিসেবে আমরা যে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছি, সেটা উল্লেখ করেছেন। পদ্মা সেতুসহ বড় বড় অবকাঠামোগুলোর কথা তুলে ধরেছেন। 

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কিছু বলেছেন কি?
হ্যাঁ, বলেছেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর এই কথাটা ততটা প্রচার পায়নি। অন্যান্য কথার ভীড়ে হারিয়ে গেছে। জাতিসংঘসহ পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তিনি এ নিয়ে আলোচনা করেছেন। যেহেতু সামনে ইলেকশন, তাই রাজনৈতিক কথাগুলোতেই ফোকাস হয়েছে বেশি। 

প্রধানমন্ত্রী এখানে আসলেই আ.লীগ-বিএনপির মধ্যে হাঙ্গামা হয়। এ থেকে বেরুনোর উপায় কী?
আমাদের মনে রাখা উচিৎ, একজন প্রধানমন্ত্রী যখন ভিনদেশে যান, সেখানে দলের প্রধান হিসেবে যান না। রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হিসেবে যান। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও বিদেশে গেলে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন, আওয়ামী লীগের নয়। যুক্তরাষ্ট্রে এসে দেশীয় রাজনীতি করার কোনো যুক্তি আছে বলে আমি মনে করি না। যতদিন থেকে আমরা এ থেকে বেরুতে না পারব, ততদিন পর্যন্ত এসব হাঙ্গামা চলতেই থাকবে। এভাবে ভিসানীতি আরোপিত হতেই থাকবো। এই হাঙ্গামাকারীরা আসলে দেশের ক্ষতি করছে।

অন্যান্য দেশের বেলায় কি এমনটা হয়?
প্রশ্নই ওঠে না। এই যে ভারতের মতো বিশাল থেকে প্রতিনিধিরা আসল, তাদের ক্ষেত্রে তো এমনটা দেখা যায়নি। ভারতের কংগ্রেস তো অনেক বড় দল, তারা কিন্তু  এখানে নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে যায়নি। আমেরিকার চিরশত্রু চীন, ভেনেজুয়েলা, কিউবা থেকে রাষ্ট্রপ্রধানর এসেছেন, অথচ একটাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তাদের কাছ থেকে আমাদের শেখা উচিৎ। কোনো পলিটিক্যাল পার্টি নয়, আমাদের উচিত দেশকে সাপোর্ট করা। পাকিস্তানের কথাই ধরুন, ইমরান খানকে আটক করা হয়েছে, জেলে নেওয়া হয়েছে। এখানে তো তার অসংখ্য সমর্থক আছেন। সেই সমর্থকরা কী বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন?

ভিসানীতি বাংলাদেশের জন্য কতটা ভয়ের কারণ?
এই জিনিসটা আসলে ভুয়া। ভিসানীতি বলে কিছু করা হয়নি। এটা হয়তো ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস থেকে ছড়ানো হয়েছে। আমেরিকার পক্ষ থেকে আসলে কিছু বলা হয়নি। যদি হতো, তাহলে জো বাইডেন এগিয়ে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সেলফি তুলতেন না। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী যে যুক্তরাষ্ট্রে আসলেন, বেশ কয়েকদিন এখানে ছিলেন, মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক হলো…সেখানে কিন্তু ভিসানীতি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। এই পুরোটাই একটা ভোগাস ব্যাপার। আমাদের দেশের সাংবাদিকরাই বিষয়টাকে অতিরঞ্জিত করেছেন। 

ব্যবসায়ীরা কেন আসেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে?
একটা কারণ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা। ১৪ ঘণ্টার একটা দীর্ঘ ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকা যায়, চাইলেই দেখা করা যায়, কথা বলা যায়। বাংলাদেশে যেটা প্রায় অসম্ভব। আরেকটা কারণ হলো, প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হলে ভিসাটা দ্রুত হয়ে যায়। আর একবার আমেরিকার ভিসা হয়ে গেলে পরবর্তীতে অন্যান্য দেশের ভিসা হওয়াটাও অনেকটা সহজ হয়ে যায়। আরেকটা বিষয় হলো, প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হওয়াটা একটা সার্টিফিকেট। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এখানে আসার পর তাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়, অ্যাওয়ার্ড হয়। বিভিন্ন সংগঠন এগুলো করে থাকে। এসব কারণে না হয়ে ব্যবসায়ীরা যদি নিজেদের একটা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে একত্র হতেন, তাহলে সেটা কাজে লাগতো।

বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশকে কীভাবে আরও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা যায়?
আমাদের অ্যাম্বাসিগুলোকে আরও একটিভ হতে হবে। আমাদের যে ইনভেস্টমেন্ট সেক্টরগুলো আছে, সেগুলোর নেটওয়ার্ক আরও বিস্তৃত করতে হবে। শুধু বাঙালিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। দেশের রাজনীতির কোন্দল থেকে বেরুতে হবে। আমাদের ছেলেমেয়েদেরকে আরও ইনভলব করতে হবে।


চ্যানেল৭৮৬ এর নিউজ রুমে যোগাযোগ করতে ইমেইল করুন এই ঠিকানায়[email protected] । আপনার পণ্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নম্বরে।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ