![‘নিজেদের প্রতি আস্থা ফেরাতে সক্ষম হয়েছে আমেরিকান মুসলমানরা’ ‘নিজেদের প্রতি আস্থা ফেরাতে সক্ষম হয়েছে আমেরিকান মুসলমানরা’](https://www.channel786.com/media/imgAll/2021May/dffdfd-2309151627.jpg)
শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, সারা বিশ্বের ইতিহাসেই এক গভীর ক্ষতের নাম নাইন-ইলেভেন। এই সন্ত্রাসী হামলায় বলির পাঠা হয়েছিল আমেরিকান মুসলমানরা। তাদেরকে সন্দেহ করা হয়েছে, হেনস্থা করা হয়েছে। এই ঘটনার সুদূরপ্রসারী প্রভাব নিয়ে চ্যানেল৭৮৬ এর সঙ্গে কথা বলেছেন লং আইল্যান্ডের ডেমোক্রেটিক কংগ্রেশনাল প্রার্থী ডা. মুজিবুল হক। সঙ্গে ছিলেন রোকেয়া মোহনা।
নাইন ইলেভেনের প্রভাব কতটা সুদূরপ্রসারী?
এই ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসকেই পাল্টে দিয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মুসলমানদের, বিশেষকরে আমেরিকান মুসলমানদের। ২০০৫ সালে আমি পরিবার নিয়ে আমেরিকায় আসি। তখনই সেটা টের পেয়েছিলাম। আমার কয়েকজন আত্মীয় তারও অনেক আগ থেকে নিউইয়র্কে বসবাস করতো। তারা পরিস্থিতি আমাদেরকে জানাতো। তখন মুসলমানরা অনেক হেনস্তার শিকার হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে, বিশেষকরে নিউইয়র্কে মুসলমানরা থাকতে পারবে কিনা, সেই প্রশ্নও উঠেছিল। তারপর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।
তাহলে কি মুসলমানদের প্রতি আস্থা ফিরেছে আমেরিকার?
হ্যাঁ, আমি বলবো আস্থা ফিরেছে। আস্থা ফেরানোর এই যাত্রায় মুসলমানদের অবদানই সবচেয়ে বেশি। মুসলমানরা যে ভায়োলেন্সে বিশ্বাস করে না, বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সেটা আমেরিকানদের বোঝাতে হয়েছে। এখানকার মুসলিম কমিউনিটি এ ব্যাপারে সোচ্চার হয়েছে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে টেরোরিজমের বিরুদ্ধে কথা বলা হয়েছে, হচ্ছে। নাইন-ইলেভেনে যারা নিহত হয়েছে, তাদের পরিবারের প্রতি মুসলমানরা সমবেদনা জানিয়েছে। তাদের জন্য দোয়া করেছে। এই বিষয়গুলো মুসলমানদের প্রতি আস্থা ফেরাতে সাহায্য করেছে।
নিউইয়র্কে আজানের অনুমতির বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
আস্থা ফেরার যে কথা বলছিলাম, এই অনুমতি তারই প্রতিফলন। নাইন-ইলেভেনের ঘটনার পর মুসলমানরা যা কল্পনাও করতে পারেনি, আজ সেটাই বাস্তব। মুসলমানদের প্রতি আস্থা না ফিরলে কোনোভাবেই এই অনুমতি দেওয়া হতো না। আরেকটা পয়েন্ট হলো, এটা সম্ভব হয়েছে মূলধারার রাজনীতিতে মুসলমানদের ইনভলবমেন্টের কারণে। মূলধারার রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে মুসলমানরা বারবার দাবি জানিয়েছে। এক পর্যায়ে সেই দাবি বাস্তবায়ন হয়েছে। আমেরিকানদের সঙ্গে না মিশে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে রাখলে কিন্তু এই সফলতা আসতো না।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি কমিউনিটির সবচেয়ে বড় করণীয় কী?
যতটা পারা যায়, মূলধারার রাজনীতিতে যুক্ত হতে হবে। এখানে থেকে আমরা যদি দেশীয় রাজনীতি করি, তাহলে তো কোনো লাভ হলো না। উল্টো অনৈক্য তৈরি হয়ে কমিউনিটির ক্ষতি হয়। যত বেশি আমরা আমেরিকার মূলধারার রাজনীতির সঙ্গে মিশতে পারবো, ততই আমরা আস্থা অর্জনে সক্ষম হবো। আমাদের অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।
লং আইল্যান্ডে ডেমোক্রেট প্রার্থী হিসেবে আপনার জার্নি কেমন?
লং আইল্যান্ডটা হলো নিউইয়র্কের একটা কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্ট। ২০২২ সালে আমি এই ডিস্ট্রিক্ট থেকে প্রার্থী হয়েছিলাম। প্রথমদিকে খানিকটা এগিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে হেরে যাই। এখানে তো ভোটে কোনো ধরনের কারচুপির সুযোগ নেই, তাই যতগুলো ভোট পেয়েছি, সবগুলোই সলিড। মূলত এখানকার সাউথ এশিয়ান কমিউনিটির পক্ষ থেকেই আমি প্রার্থী হয়েছিলাম। তবে বাস্তবতা হলো, ভোটারদের মাঝে সাড়া ফেলতে পারিনি। তবে এই ইলেকশন করতে গিয়ে জনগনের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা যতটুকু বেড়েছে, সেটাকে ছোট করে দেখতে চাই না। দিনশেষে এটাই আমার অর্জন। এই অর্জন দিয়েই সামনে এগিয়ে যেতে চাই। ২০২৪ সালের নির্বাচনে আবারও প্রার্থী হতে যাচ্ছি। সেই লক্ষ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
চ্যানেল৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ইমেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পণ্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।