Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

‘স্কুলজীবনেই ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলাম’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:৪৯, ২২ আগস্ট ২০২৩

‘স্কুলজীবনেই ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলাম’

শোকের মাস উপলক্ষে ‘আমরা শোকাহত’ শিরোনামে বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে চ্যানেল ৭৮৬। একটি পর্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি নিজের রাজনৈতিক জার্নির কথা শেয়ার করেছেন দর্শক-শ্রোতাদের সঙ্গে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তো অনেক বড় মানুষ। তার ব্যাপারে আপনার মূল্যায়ন কী?
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ। আজকে আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ কিংবা স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, এসব স্বপ্ন নিয়েই তিনি দেশ স্বাধীন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আজকে ২০২৩ সালে যে ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে, সেটা হয়ে যেত আরও ২০-২৫ বছর আগে। বঙ্গবন্ধু ছিলেন এমন এক নেতা, যিনি কোনোদিন কোনো শক্তির কাছে মাথা নত করেননি। তার ভাষণগুলো বিশ্লেষণ করলেই সেটা বেরিয়ে আসবে। তার নেতৃত্ব না থাকলে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেতাম না।

জাতির পিতার বাকি খুনিদের শাস্তি নিশ্চিত করার ব্যাপারে আপনি কতটুকু আশাবাদী?
দেখুন, এক সময় কিন্তু এই বিচারের ব্যাপারে আশাবাদী হওয়াটা প্রায় অসম্ভব ছিল। সেটা কিন্তু আজ বাস্তবে ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় খুনিদের বিচার হয়েছে, সাজা কার্যকর হয়েছে। যেসব খুনিরা এখনও পালিয়ে আছে, তাদেরকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে একাধিক উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। সবমিলিয়ে আমি আশাবাদী, বঙ্গবন্ধুর সব খুনিদের বিচার এই বাংলার মাটিতে হবেই।

কেন খুনিদের ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না?
বড় দেশগুলোর অসহযোগিতার কারণেই এমনটা হচ্ছে। আজকে অনেকেই আমাদেরকে মানবাধিকারের সবক দিতে আসে। কিন্তু মানবাধিকার লংঘন কোথা থেকে শুরু হয়েছিল, সেটার খোঁজ রাখে না। আবার যারা আমাদেরকে মানবাধিকারের জ্ঞান দেয়, তারাই মানবাধিকার লংঘন করছে। তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার ছিলেন বঙ্গবন্ধু হত্যার অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ও মাস্টারমাইন্ড। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্পষ্ট বিরোধিতা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানের কথা যদি বলি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একজন খুনি যুক্তরাষ্ট্রে আরেকজন কানাডায় পালিয়ে আছে। দেশ দুটি খুনিদের ফিরিয়ে দিতে পারছে না, কিন্তু প্রতিনিয়ত মানবাধিকারের কথা বলে যাচ্ছে।

আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কি ছিল?
মার্কিন প্রশাসন ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, কিন্তু জনগণ ছিল পক্ষে। তারা আমাদের স্বাধীনতার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন, প্রার্থনা করেছেন। সিনেটর টেড কেনেডি থেকে শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বড় বড় আইনপ্রণেতাও বঙ্গবন্ধুকে তাদের আইডল মনে করতেন। তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য নেপথ্য থেকে অনেক চেষ্টা করেছেন। আর সে কারণেই যুক্তরাষ্ট্র সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েও বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে আটকে রাখতে পারেনি।

আপনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি কেন করেন?
আমরা যখন স্কুলে পড়ি, তখন বঙ্গবন্ধু নামটাই অনেকটা নিষিদ্ধ ছিল। সাধারণত নিষিদ্ধ জিনিশের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেশি থাকে। স্বাভাবিকভাবেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমার একটা কৌতুহল তৈরি হয়। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমি শ্রদ্ধেয় এম আর আখতার মুকুল, গাফফার চৌধুরীর বিভিন্ন লেখা পড়তাম। এসব লেখকের বই পড়ে বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটা ধারণা তৈরি হলো। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পেছনে যে বিশাল ষড়যন্ত্র ছিল, সেটা সম্পর্কেও জানতে পারলাম। আমার কাছে মনে হয়েছে, এটা জঘন্যতম অন্যায় কাজ। কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। একজন নাগরিক হিসেবে এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করা উচিত, সেটা করতে গিয়েই আমি আওয়ামী লীগের কর্মী হয়েছি।

সেই সময়ের কোনো স্মৃতি…?
আমি তখন ক্লাস এইটে পড়ি। কিছুটা গোপনে আমরা কয়েকজন মিলে জাতীয় শোক দিবসে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম। সেই অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ছিলাম আমি। বক্তব্য দিতে গিয়ে ডায়াসের মধ্যে বেশ জোরে একটা থাপ্পড় মেরে বলেছিলাম, এই বাংলার মাটি যদি পবিত্র হয়ে থাকে, তাহলে এখানে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হবে। সেদিন শপথ নিয়েছিলাম, যতদিন এই মাটিতে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার না হবে, ততদিন আন্দোলন-সংগ্রাম করে যাবো। আওয়ামী লীগ কতদিন করবো জানি না, তবে বঙ্গবন্ধুর সব খুনীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত এই সংগ্রাম চলবে।

যুক্তরাষ্ট্রে এসে কীভাবে রাজনীতিতে জড়ালেন?
আমি তো ছোটবেলা থেকেই রাজনীতি করি, তাই যুক্তরাষ্ট্রে এসে রাজনীতিতে জড়ানো আমার জন্য খুবই স্বাভাবিক ছিল। ছোটবেলায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ছাত্রলীগ করা শুরু করলাম। তারপর যুবলীগ, আর এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। যুক্তরাষ্ট্রে এসেও সরব রয়েছি। আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছি, ইনশাআল্লাহ করে যাব। ১৯৯৮ সালে আমি যুক্তরাষ্ট্রে এসেছি। এদেশে এসে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের পক্ষে জনমত গড়ার চেষ্টা করি। এ ব্যাপারে আমরা নানা প্রোগ্রাম করেছি। জাতিসংঘের সামনে একটা বিশাল সমাবেশ করেছিলাম। সেই সমাবেশ থেকে আমরা জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। মার্কিন বিভিন্ন মেইনস্ট্রিম মিডিয়াতে সেদিন আমার বক্তব্য প্রচার হয়েছিল।


চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ