Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

‘বঙ্গবন্ধুকে ছুঁয়ে দেখার দুর্লভ সৌভাগ্য হয়েছে আমার’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:৪৪, ১৯ আগস্ট ২০২৩

‘বঙ্গবন্ধুকে ছুঁয়ে দেখার দুর্লভ সৌভাগ্য হয়েছে আমার’

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে ‘আমরা শোকাহত’ শিরোনামে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চ্যানেল ৭৮৬। সেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ডা. মুহাম্মদ আলী মানিক। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি জাতির জনকের সঙ্গে তার দুর্লভ স্মৃতি শেয়ার করেছেন।

শোকাবহ ১৫ আগস্ট নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কি?
এই দিনটি বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কময় দিন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, যার জন্ম না হলে আমরা একটা স্বাধীন দেশ পেতাম না, তাকে হত্যা করা হলো নৃশংসভাবে। বঙ্গবন্ধু তার রাজনৈতিক জীবনের সিংহভাগ সময় ছিলেন কারাগারে, ওই সময় পশ্চিম পাকিস্তানিরা তার গায়ে হাত দেওয়ারও সাহস পায়নি। অথচ সেই বঙ্গবন্ধুকে তার নিজের দেশে খুন করা হলো। এ চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে!

এই শোকের মধ্যেও আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু আছে কি?
আছে। সুখের কথা হলো, দীর্ঘদিন পর হলেও বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার হয়েছে, হচ্ছে। এখনও যারা কাপুরুষের মতো পালিয়ে আছে, তাদেরকে পাকড়াও করে বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টা চলছে। সেটা সম্পন্ন করা গেলে বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে, বাংলাদেশের আত্মা শান্তি পাবে। এ ব্যাপারে আমরা সফল হবো, ইনশাআল্লাহ।

আপনার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর কোনো স্মৃতি আছে?
আমি সত্যিই সৌভাগ্যবান, কারণ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। আমি বেড়ে উঠেছি কলাবাগান লেক সার্কাসে, বঙ্গবন্ধুর বাড়ির একদম কাছে। পায়ে হেঁটে প্রায় সময় ধানমন্ডি ৩২-এ চলে যেতাম। ৬৯-এর গণআন্দোলনের পর বঙ্গবন্ধু যখন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে মুক্তি পেলেন, তখনও বন্ধুদের সঙ্গে সেখানে গেলাম। গিয়ে দেখলাম, সাদা পাঞ্জাবি আর চেক লুঙ্গি পরে হ্যান্ড মাইক হাতে নিয়ে ব্যালকুনিতে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

 

তার সঙ্গে আপনার সামনাসামনি কথা বলার সুযোগ হয়েছিল?
আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় দিন ১৯৭০ সালের ঈদের দিন। বঙ্গবন্ধু ঈদের নামাজ পড়তেন বাড়ির পাশেই ধানমন্ডি মাঠে। সেখানে আমিও নামাজ পড়েছিলাম। দেখা হলো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালেও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ঈদের নামাজ পড়েছিলাম। ওই সময়টাতে আমি নবম শ্রেণির ছাত্র। তখন কিন্তু বঙ্গবন্ধুর তেমন কোনো প্রোটকল ছিল না, গার্ড ছিল না। আমরা বন্ধুরা মিলে খুব কাছ থেকেই তাকে দেখেছি, কথা বলেছি। ঈদের নামাজের আগে-পরে সাধারণ মানুষও তার সঙ্গে কোলাকুলি করেছে। আমি যেহেতু খুব ছোট ছিলাম, তাই সেই সুযোগ হয়নি। তবে হাত দিয়ে তাকে ছুঁয়ে দেখেছি। এই স্মৃতিগুলো ভুলবার নয়।

৭৫-এর ১৫ আগস্টের দিনটা কেমন দেখেছেন?
গোলাগুলির আওয়াজে ভোরবেলা ঘুম ভেঙে গেল। রেডিওতে মেজর ডালিমের কথা শুনলাম। আমরা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম। বেলা বাড়ার পর বন্ধুদের নিয়ে মিরপুর রোডের দিকে গেলাম। তবে বেশিদূর যেতে পারলাম না, দেখলাম সামরিক বাহিনী ট্যাংক আর গোলাবারুদ নিয়ে অবস্থান নিয়েছে। কলাবাগানের কাছে দাঁড়িয়ে জটলা করে আলোচনা করছিলাম। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সবাইকে যে মেরে ফেলা হয়েছে, সেটা কিন্তু আমরা তখনও জানতে পারিনি। পরিস্থিতি কী, তা দেখতে ৩২ নম্বরের দিকেও যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। তারপর যখন পুরো খবরটা যখন জানলাম, তখন শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছি, সেই শোক আজও বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছি।

বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগতি কতদূর?
এ ব্যাপারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্টভাবেই বলেছেন, একটা দেনদরবার হচ্ছে। আমরাও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে এ ব্যাপারে কাজ করছি। বিভিন্নভাবে লবিং করছি। আশাকরি এই চেষ্টায় আমরা সফল হবো।

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আপনি অনেক কবিতা লিখেছেন, সে সম্পর্কে জানতে চাই…
২০০১ থেকে আমি প্রতিবছরই শোক দিবস উপলক্ষে কবিতা লিখতাম। কবিতাগুলো লিখে বিভিন্ন পত্রিকায় পাঠাতাম এবং সাহিত্যানুষ্ঠানে পড়ে শোনাতাম। তারপর ২০২০ সালে সবগুলো কবিতা একত্র করে একটি বই বের করেছি। বইটির নাম- কবিতায় বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ। এখানে বঙ্গবন্ধুর ওপরেই প্রায় ৫০টা কবিতা রয়েছে।


চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ