Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

‘প্রেসিডেন্সিয়াল অ্যাওয়ার্ড আমার দায়িত্ব বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০২:৩১, ২৫ জুলাই ২০২৩

‘প্রেসিডেন্সিয়াল অ্যাওয়ার্ড আমার দায়িত্ব বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে’

যুক্তরাষ্ট্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার প্রেসিডেন্সিয়াল লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড লাভ করেছেন বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব আতিকুর রহমান। তিনি গ্লোবাল হেলথ একাডেমির প্রেসিডেন্ট, ফোবানার চেয়ারপারসন এবং ফ্লোরিডাস্থ বাংলাদেশ-আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্সিয়াল অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার পর মুখোমুখি হয়েছেন চ্যানেল ৭৮৬-এর।

প্রেসিডেন্সিয়াল লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড সম্পর্কে জানতে চাই…।
এটা আসলে একটা সেবামূলক অ্যাওয়ার্ড। খুব বেশিদিন হয়নি এই অ্যাওয়ার্ড চালু হয়েছে। যারা আমেরিকান স্বার্থ রক্ষা করার পাশাপাশি তাদের নিজেদের কমিউনিটির মানুষের সেবা করে থাকেন, তাদেরকে এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। মোদ্দাকথা, যুক্তরাষ্ট্রে যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, তারাই এর জন্য সিলেক্ট হয়ে থাকেন।

গুরুত্বপূর্ণ এই অ্যাওয়ার্ড পেয়ে আপনার কেমন লাগছে?
আমাকে যখন এ সংক্রান্ত চিঠিটা পাঠানো হলো, আমি খুব সারপ্রাইজড হয়েছি। এবার পুরস্কারটা যাদেরকে দেওয়া হলো, তাদের মধ্যে আমিই একমাত্র বাঙালি ছিলাম। সেখানে অনেক বড় মানুষ ছিলেন। সত্যিই এটা আমার জন্য দারুণ আনন্দের ব্যাপার এবং আমাদের বাঙালি কমিউনিটির জন্য অনেক সম্মানের।

এই অর্জন কি আপনার দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিলো?
অবশ্যই। এটা আমি অন্তর থেকে ফিল করি যে, আমার দায়িত্ব এখন বহুগুণে বেড়ে গেছে। আমি তো ফোবানার চেয়ারম্যান এবং আপনারা জানেন, সংগঠনটা ভেঙে অনেক টুকরা হয়ে গেছে। এই অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার পর আমার মনে হলো, ফোবানাকে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে আমার দায়িত্ব এবার বেড়ে গেল। এ ব্যাপারে আমি শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার পর পরিবার এবং বন্ধুমহল থেকে কেমন প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন?
সবাই ধন্যবাদ জানিয়েছে। বন্ধুদের প্রায় সবাই কল করে কংগ্রাজুলেশন জানিয়েছে। দ্যাট ইজ রিয়েলি গ্রেট। যারা আমাকে অ্যাপ্রিশিয়েট করেছেন, আমিও তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।

এর পেছনে কার ভূমিকাকে বড় করে দেখছেন?
ড. ডি থম্পসনের ভূমিকাটা অনেক বড়। এই নারী পুরস্কারটির জন্য আমার নাম প্রস্তাব করেছেন। তার একটা কোম্পানি আছে, নাম-পারপাস নেভার ডাইজ। নামটা আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে। সে আমাকে কীভাবে খুঁজে বের করলো এবং আমাকে এই অ্যাওয়ার্ডের জন্য কেন প্রস্তাব করলো—সেই প্রশ্নটা তাকে করেছিলাম। সে বললো, আমি তোমাকে অনেকদিন ধরে ফলো করছি। তুমি বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত এবং নানা সামাজিক কাজ করছো। শিক্ষার অগ্রগতির জন্য কাজ করে যাচ্ছো। এজন্য আমি তোমার নাম প্রস্তাব করেছি।

আপনার এই অর্জনে বাংলাদেশি কমিউনিটির অন্যান্যরা কতটা অনুপ্রাণিত হতে পারে?
এটা হতে পারে দারুণ অনুপ্রেরণার একটা বিষয়। তবে দুঃখ হলো, বাংলাদেশি কমিউটির মধ্যে মারাত্মক অনৈক্য বাসা বেঁধেছে। আমি মনে করি, একত্র হওয়ার সময় এসেছে। ব্যক্তিবিদ্বেষ এবং হিংসা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ঐক্যবদ্ধ কমিউনিটি দেখতে পারলেই আমার এই অর্জন স্বার্থক হবে বলে মনে করি। 

বাংলাদেশি কমিউনিটিকে শক্তিশালী করতে কী করা দরকার? 
নতুন জেনারেশনকে তৈরি করতে হবে। একটা জাতির সংস্কৃতি যদি ডেভেলপ না হয়, সেই জাতি কোনোদিন উন্নতি করতে পারে না। এই দেশে আমাদের ছেলেমেয়েরা যারা বেড়ে উঠছে, তারা তো ইংরেজি জানেই, এর পাশাপাশি বাংলাটাকেও আত্মস্থ করতে হবে। তারা যেন আগামীতে এই দেশে বাংলাদেশের সংস্কৃতিটাকে এগিয়ে নিতে পারে, সেভাবে তাদেরকে তৈরি করতে হবে। এখানকার পরবর্তী প্রজন্মকে শক্তিশালী করা মানেই বাংলাদেশি কমিউনিটিকে শক্তিশালী করা। 

এক্ষেত্রে ফোবানা কী দায়িত্ব পালন করছে?
ফোবানার মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি বাংলা সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দিতে। আমরা এ পর্যন্ত বাংলা কবিতা পাঠের তিনটা আসর করেছি। তবে আমাদের মূল সমস্যাটা হলো, এখানে বাংলা স্কুল নাই বললেই চলে। নতুন প্রজন্ম বাংলা বলবে কোথা থেকে? ওদের কাছে তো সেই গাইডলাইন নেই। ফোবানা থেকে এ ব্যাপারে কিছু একটা করার কথা ভাবছি আমরা। 

বাংলাদেশের দূতাবাস কী দায়িত্ব পালন করতে পারে?
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেসব দূতাবাস রয়েছে, যেমন ধরুন ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস। তাদের কিন্তু একটা কালচারাল সেন্টার রয়েছে, যেটার মাধ্যমে সুক্ষ্মভাবে হলেও তারা মার্কিন কালচারকে ছড়িয়ে দিচ্ছে। অথচ আমেরিকায় আমাদের যে দূতাবাস রয়েছে, সেখানে কিন্তু এমন কিছু নেই। বাংলা সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে একটা সেন্টার করা খুব জরুরি বলে আমি মনে করছি। অ্যাম্বাসির পাশাপাশি কনস্যুলেট জেনারেলগুলো যদি এটা করে, তাহলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম তাদের শেকড়ের সংস্কৃতি জেনে বড় হতে পারবে।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ