Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধদের উন্নত জীবন উপহার দিতে চাই : রুবাইয়া রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৩৮, ৭ জুন ২০২৩

প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধদের উন্নত জীবন উপহার দিতে চাই : রুবাইয়া রহমান

রুবাইয়া রহমান

নিউইয়র্ক সিটির ডিস্ট্রিক্ট-২৩ থেকে নির্বাচন করছেন রুবাইয়া রহমান। ২৭ জুন এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগাম ভোট দেওয়া যাবে ১৭ জুন থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত। চ্যানেল৭৮৬ এর সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাৎকারে রুবাইয়া রহমান জানান, নির্বাচিত হলে প্রতিবন্ধী এবং বৃদ্ধদের নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করতে চান। কাজ করতে চান বাংলাদেশি কমিউনিটির সামগ্রিক কল্যাণের জন্য।

চ্যানেল৭৮৬ : আপনার পলিটিক্যাল জার্নিটা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
রুবাইয়া রহমান :
বাংলাদেশে আমি আইনের ছাত্রী ছিলাম। আইন মানেই কিন্তু পলিটিক্সসহ অন্যান্য সকল কিছু। আইন পড়ার কারণেই হয়তো মানবাধিকার নিয়ে আমার একটা আগ্রহ তৈরি হয়েছে। আমেরিকাতে আসার পরও আইন ব্যবসার সাথে জড়িত হই। মানুষের অধিকার নিয়ে সচেতন হয়ে উঠি। তারপর ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়ি এ দেশের মেইনস্ট্রিম রাজনীতির সঙ্গে।

চ্যানেল৭৮৬ : আপনার কাজের বড় অংশ জুড়ে রয়েছে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা। নির্বাচিত হলে তাদের জন্য কী করবেন?
রুবাইয়া রহমান :
আমার একটা বাচ্চা অটিস্টিক। সঙ্গত কারণেই অটিজম নিয়ে আমার আগ্রহ। এ ব্যাপারে কাজ করতে গিয়ে মনে হলো, বিচ্ছিন্নভাবে কাজ না করে অটিস্টিক বাচ্চাদের সহযোগিতার জন্য একটা প্রাতিষ্ঠানিক চেষ্টা প্রয়োজন। সেজন্য আমরা একটা নন-প্রফিট অরগানাইজেশন করলাম, সমস্ত ডিজেবল পিপলকে হেল্প করার চেষ্টা করলাম। প্রায় ১৫ বছর ধরে আমরা এই প্রতিষ্ঠানটা নিয়ে কাজ করছি। এখন আমাদের প্রয়োজন হলো গর্ভমেন্ট লেভেলে একজন প্রতিনিধি। যদি সেটা থাকে তাহলে কাজটা অনেক সহজ হয়ে যাবে। সেই চিন্তাটা মাথায় রেখেই আমি মনে করলাম, যদি সিটি কাউন্সিল ইলেকশনে একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি এবং যদি নির্বাচিত হই তাহলে ডিজেবল মানুষকে হেল্প করার পাশাপাশি বাংলাদেশি কমিউনিটিকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।

চ্যানেল৭৮৬ : কমিউনিটির সিনিয়র পারসনদের জন্য কী করতে চান?
রুবাইয়া রহমান :
কমিউনিটির যারা সিনিয়র পারসন, তাদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা থাকা উচিত। আমেরিকান লাইফে বাবা-মারা মূলত একা। ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনিরা বেশিরভাগ সময় বাইরেই থাকেন। বৃদ্ধ বাবা-মাকে সময় দেওয়ার মতো কেউ থাকে না। এই সিনিয়র পারসনরা হয়তো বাসায় বসে অসুস্থ ফিল করছেন, কিন্তু কাউকে বলতেও পারছেন না। সেজন্য আমরা চিন্তা করছি আমাদের সিনিয়রদের কেয়ারের জন্য আরও বেশি সার্ভিস দেব। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, সিনিয়রদের জন্য একটা রিক্রিয়েশন প্লেস দরকার। আমি ইলেক্টেড হলে এটা বাস্তবায়ন করতে চাই।

চ্যানেল৭৮৬ : নির্বাচিত হলে কোন বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবন?
রুবাইয়া রহমান :
কমিউনিটি নিয়ে কাজ করতে গেলে ওভারঅল সব বিষয় নিয়েই কাজ করতে হবে। কমিউনিটির বাচ্চাদের নিয়ে আমাদের ভাবনা আছে। তাদের জন্য ভালো স্কুল দরকার। তবে সবচেয়ে গুরুত্ব দেব সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি নিয়ে। অস্বীকার করার উপায় নাই, নিউইয়র্কে ল’ অ্যান্ড অর্ডার পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক বেশি খারাপ। মানুষ কাজে যেতে ভয় পাচ্ছে, সাবওয়েতে উঠতে ভয় পাচ্ছে, গাড়ি পার্ক করে বিশ্রাম নিতে ভয় পাচ্ছে। তাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আমি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে চাই। এই অবস্থা থেকে আমাদের উন্নতি করতেই হবে।

চ্যানেল৭৮৬ : জয়ের ব্যাপারে কেন আপনি আশাবাদী?
রুবাইয়া রহমান :
এবারের ইলেকশনে আমার ডিস্ট্রিক্ট থেকে আমিই একমাত্র সাউথ এশিয়ান ক্যান্ডিডেট। তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে আমি ছাড়া একজন কোরিয়ান, আরেকজন শ্বেতাঙ্গ। ডিস্ট্রিক্ট-২৩ এর ৪৭ শতাংশ বাসিন্দা সাউথ এশিয়ান। এর মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মানুষই বেশি। যদি আমরা এই ৪৭ শতাংশ মানুষকে একত্র করতে পারি, মোটিভেট করতে পারি, তাহলে তাদের অপশন অবশ্যই আমি। আশাকরি তারা সঠিক প্রার্থী বেছে নিতে ভুল করবে না।

চ্যানেল৭৮৬ : রাজনীতিতে আপনি কিছুটা নবীন-এই বিষয়টা জয়ের পথে বাধা হতে পারে?
রুবাইয়া রহমান :
না, রাজনীতিতে আমাকে একেবারে নবীন কিংবা আগন্তুক ভাববার কোনো কারণ নেই। পলিটিক্সের সঙ্গে জড়িত আছি অনেকদিন থেকে। এর আগে অনেক পলিটিক্যাল ক্যাম্পেইনের সঙ্গে ছিলাম। মেলিন্ডা কার্টজ, ডোনাভান রিচার্ডসহ এমন অনেক ইলেকটোরালের সঙ্গে আমি কাজ করেছি। বিভিন্ন কমিউনিটির মানুষের অধিকার নিয়ে আমি কাজ করেছি। সুতরাং, আমি মনে করি আমাকে চট করে প্রত্যাখ্যান করা সম্ভব না। যদি আমার দক্ষিণ এশীয় ভাইবোনেরা আমাকে সমর্থন করেন, তাহলে জয়ী হওয়াকে আমি কঠিন কিছু মনে করি না। 

চ্যানেল৭৮৬ : আপনার জয়ের পথে কোন বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন? 
রুবাইয়া রহমান :
হ্যাঁ, একটা চ্যালেঞ্জ আছে। নির্বাচনের দিন অর্থাৎ জুনের ২৭ তারিখ ওয়ার্কি ডে। তাই এই দিনে বাইরে বেরিয়ে ভোট দেওয়ার ব্যাপারটা অনেকে ভুলে যেতে পারেন। এই একটি কারণে আমি ভোট পেতে পিছিয়ে যেতে পারি। এজন্য আমি আমার ডিস্ট্রিক্টের মানুষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই, দয়া করে ২৭ জুনের কথা মনে রাখবেন। আপনারা ভোট দিলে আমি জয়ী হবো, ইনশাআল্লাহ।

চ্যানেল৭৮৬ : মেইনস্ট্রিম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়াকে কতটা গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন?
রুবাইয়া রহমান :
কমিউনিটির অধিকার আদায়ে মেইনস্ট্রিম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নেমেছি সেটাও এই প্রচেষ্টারই একটা অংশ। আমরা মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলছি এবং ইতোমধ্যেই অনেকগুলো নির্বাচনী বিতর্কে অংশ নিয়েছি। এই প্রক্রিয়ায় আরও বেশি করে অংশগ্রহণ করতে চাই। একইসাথে অন্যদেরকেও এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে বলবো। মেইনস্ট্রিম রাজনীতিতে জড়িয়ে ইতোমধ্যে আমরা কিছু সাফল্যও পেয়েছি। আমাদের শাহানা হানিফ, সোমা সাঈদরা ইলেকটেড। ভবিষ্যতে এমন উদাহরণ আরও তৈরি হবে বলে আশাকরি।

চ্যানেল৭৮৬ : আমেরিকায় এসেও বাংলাদেশি কমিউনিটির অনেক দেশীয় রাজনীতি আকড়ে ধরে রাখছেন। এদের উদ্দেশে কী বলবেন?
রুবাইয়া রহমান :
আমেরিকায় এসেও দেশীয় রাজনীতি আকড়ে ধরে রাখাকে আমি ভালো কিছু বলতে পারছি না। এটা অগ্রসরমান চিন্তা নয়। তবে আমাদের নতুন প্রজন্ম কিন্তু এগুলো থেকে মুক্ত। তাদের কাছে আমি আহ্বান জানাবো, তারা যেন এদেশের রাজনীতিতে পা রাখে। এখানে সবাই সবার কাজ নিয়ে খুবই ব্যস্ত। কিন্তু এর পাশাপাশি কেউ যদি পলিটিক্যালি কনসাস না হয়, তাহলে সে তার অধিকার সম্পর্কে কিছুই জানতে পারবে না। পুরোপুরি না হোক, কিছুটা হলেও রাজনীতির সঙ্গে থাকা জরুরি।


চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ