Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

নেক্সট ফোবানা কনভেনশন নিয়ে দারুণ আশাবাদী: মাসুদ রব চৌধুরী

সাইদ রহমান

প্রকাশিত: ২১:২৬, ১৪ মার্চ ২০২২

নেক্সট ফোবানা কনভেনশন নিয়ে দারুণ আশাবাদী: মাসুদ রব চৌধুরী

চ্যানেল ৭৮৬ এর অনুষ্ঠানমালায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে ‘এটর্নি রাজু মহাজন প্রেজেন্টস এনআরবি আইকন’। প্রতি সপ্তাহে একজন আইকনিক ব্যক্তিত্বকে হাজির করা হয় এই অনুষ্ঠানে। তিনি তার জীবন এবং কর্ম সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনায় থাকেন জাহান অরন্য। এবারের পর্বের অতিথি ফোবানার সেক্রেটারি মাসুদ রব চৌধুরী

আপনার ছোটবেলাটা কেমন ছিল?
সবার ছোটবেলাটাই বোধহয় রঙিন হয়। শিশুদের জীবন অনেকটা ফড়িংয়ের মতো। আর দশটা শিশুর মতো আমার জীবনটাও খুব সুন্দর ছিল। বাবার চাকরি সূত্রে আমার ছোটবেলা কেটেছে যশোরে। পড়াশোনা করেছি ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে। সেখান থেকেই গ্রাজুয়েশন করেছি। যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা- এসব এলাকা ছিল নখদর্পনে। এখনো সেই স্মৃতিগুলো ঝলমলে।

আমেরিকায় আসলেন কখন?
ঝিনাইদহ থেকে পড়াশোনা করে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। আমেরিকায় আসার একটা চেষ্টা আগে থেকেই ছিল। যখন হয়ে গেল, তখন পড়াশোনাটা মাঝপথে রেখেই চলে আসলাম।

ফোবানার সঙ্গে সম্পৃক্ততা কীভাবে?
ছোটবেলা থেকেই ভলান্টারি কাজ করার অভ্যাস আমার। যখন যেখানে সুযোগ পেয়েছি, মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছি। সঙ্গত কারণেই আমেরিকায় এসে ফোবানাকে খুঁজে বের করলাম। এটা ১৯৯২ সালের কথা। দেখলাম, এই সংগঠন থেকে বিভিন্নভাবে কমিউনিটির জন্য কাজ করা হচ্ছে। আমি যাওয়া-আসা শুরু করলাম। ধীরে ধীরে সংগঠনের অন্যান্যরাও আমাকে আপন করে নিল। 

তখনকার ফোবানা আর এখনকার ফোবানার মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
ফোবানা তখনও কমিউনিটির মানুষের জন্য কাজ করেছে, এখনো করে। তখন হয়তো কাজটা এতটা গোছানো ছিল না। এখন যতটা সুষ্ঠুভাবে কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়ন তখন হয়তো ততটা ছিল না। তাছাড়া ফোবানার পরিধি অনেক বেড়েছে। এর সঙ্গে আরও অনেক সংগঠন জড়িত হয়েছে। এখনও নতুন নতুন সংগঠন আসছে। সবমিলিয়ে ফোবানা এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বারগতিতে। 

একজন সাধারণ মানুষের কীসের মাধ্যমে অনন্য সাধারণে পরিণত হতে পারে?
পরিশ্রম তো একটা বিশেষ জায়গাজুড়ে থাকেই। তবে আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে হয় ভালো লাগা ব্যাপারটা। আমি বলতে চাইছি, কোনো একটা ব্যাপারে কারও ভালো লাগা না থাকলেও সে যদি খুব পরিশ্রম করে যায় তাহলে সফলতা পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। ভালো লাগতে হবে এবং সেখানে পরিশ্রম করতে হবে। এই দুটো মিলিয়েই আসে সফলতা। তাই একজন মানুষকে প্রথমেই তার ভালো লাগার কাজটা খুঁজে নেয়া উচিৎ। 

আপনি বাংলাদেশ কমিউনিটি অব এলএ-এর প্রেসিডেন্ট। এ সম্পর্কে জানতে চাই।
বাংলাদেশ কমিউনিটি অব এলএ মানে হলো লস এঞ্জেলেসে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটি। আমাদের এই স্টেটে বাংলাদেশি কমিউনিটির অনেকগুলো সংগঠন আছে। এর মধ্যে অন্যতম শীর্ষ সংগঠনের নাম বাংলাদেশ কমিউনিটি অব এলএ। একেকটা সংগঠনের যেমন একেকটা কাজের দিতে মূল ঝোক থাকে- কেউ হয়তো সংস্কৃতি চর্চা করে, কেউ খাদ্য সহায়তা করে। আমরা আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে কমিউনিটির অসহায় মানুষের সেবা করে থাকি। সমস্যাটা যেমনই হোক, আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাই।

বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে বিভিন্নভাবে মানুষের সেবা করে থাকেন আপনি। এর তৃপ্তিটা কতটুকু?
এর কোনো স্কেল আমার কাছে নেই, থাকলে দেখাতে পারতাম কতটা তৃপ্তি পাই। শুধু বলতে পারি, মানুষের জন্য কিছু করতে পারার যে আনন্দ, সেটা একটা স্বর্গীয় অনুভ‚তি। এই অনুভ‚তি ব্যাখ্যাতীত। আরেকটা বিষয় হলো, কোনো কাজে যখন মানুষ সাকসেস হয় তখনই কিন্তু বারে বারে সেখানে ফিরে আসে। মানুষের জন্য কিছু করার সফলতা হলো এই ভালোলাগা। এ কাজে যে ব্যর্থতা নেই তা নয়। অনেক সময় মানুষের উপকার করার চেষ্টাটা বিফল হয়। তখন মনে মনে আওড়াই- ‘ফেইলিওর ইজ দ্য পিলার অব সাকসেস’।

যুক্তরাষ্ট্রে আসার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যায় পড়লে ফোবানা থেকে কীভাবে হেল্প করা হয়?
প্রথমে বলে রাখা ভালো, ফোবানা কিন্তু একটা নন প্রফিট অরগানাইজেশন, যেটা অনেকগুলো অরগানাইজেশনকে দেখভাল করে, কোনো ব্যক্তিকে নয়। লিগ্যাল বিষয়গুলো আমরা দেখতে পারি না। তবে আমাদের নেটওয়ার্কটা যেহেতু অনেক বড়, কমিউনিটির বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের প্রায় সবাই কোনো না কোনোভাবে ফোবানার সঙ্গে যুক্ত তাই আমরা সমাধানের পথটা দেখিয়ে দিতে পারি। যেসব অ্যাটর্নিরা ফোবানার সঙ্গে যুক্ত আছেন, তারাও খুব আন্তরিকতার সাথে পরামর্শ দেন। 

পরবর্তী ফোবানা কনভেনশন নিয়ে জানতে চাই।
নেক্সট ফোবানা কনভেনশন হচ্ছে শিকাগোতে, লেবার ডে উইকেন্ডে। এবারের কনভেনশনটি নিয়ে আমরা অনেক আশাবাদী। কারণ গত দুই বছর করোনা আমাদেরকে অনেক ভুগিয়েছে। এর মধ্যে একটা কনভেনশন আমরা অনলাইনে করেছি। সঙ্গত কারণেই সেটির মধ্যেই ততটা ঔজ্জ্বল্য ছিল না। এরপরের অর্থাৎ গত কনভেনশনটা আমরা সরাসরি করেছি বটে। কিন্তু তখনও করোনার সব রেসট্রিকশন উঠে যায়নি। কনভেনশনে অংশ নেয়া সবাইকে মাস্ক পরতে হয়েছে। টিকা নেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল। এবার তো বোধহয় সেসব কিছু থাকছে না। তাই আমাদের স্বপ্নটা অনেক বড়। 

চ্যানেল ৭৮৬ এর দর্শকদের উদ্দেশে যদি কিছু বলার থাকে...
আমি মনে করি, চ্যানেল ৭৮৬ আমাদের চেয়ে আরও ভালোভাবে কমিউনিটির সেবা করে যাচ্ছে। এই যে আমি কথা বলছি, সেটা দর্শকদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। অর্থাৎ, আমাদের সঙ্গে মানুষের সংযোগ ঘটিয়ে দিচ্ছে কিন্তু এই মিডিয়া। তাই আমি ৭৮৬ এর জড়িত সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ