চ্যানেল-৭৮৬'র নিয়মিত আয়োজন 'নিউইয়র্ক ডায়েরি'তে ডেমোক্রেটিক প্রাইমারি ইলেকশন ২০২১'র ঠিক আগের দিনের বিশেষ লাইভে অতিথি হয়ে এসেছিলেন প্রাক্তন সিনেটর প্রার্থী ডিস্ট্রিক্ট-১৩, বাংলাদেশ-আমেরিকান সোসাইটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী, বাংলাদেশ আমেরিকান সোসাইটির সেক্রেটারি আব্দুর রহিম হাওলাদার এবং বাংলাদেশের ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন এর আমেরিকা প্রতিনিধি এস.এম. সোলায়মান।
বাংলাদেশি ২জনকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে দেখে কেমন লাগছে?
মোহাম্মদ আলী: অবশ্যই ভালো লাগছে। প্রথম কোনো বাংলাদেশী এবং নারী ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারপতি হওয়ার একদম দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন। এটা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য গর্বের। একই সাথে ডিস্ট্রিক্ট ৩৯ থেকে শাহানা হানিফ বিপুল ভোটে এগিয়ে আছেন। তার জয়ও অনেক টাই নিশ্চিত বলা যেতে পারে।
সর্বশেষ ভোটের আপডেট জানাবেন...
এস. এম. সোলায়মান: শাহান হানিফ সব মিলিয়ে ১০ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছেন। সোমা সাঈদ তার প্রতিপক্ষের থেকেও বেশ কিছু ভোটে এগিয়ে আছেন। ডিস্ট্রিক্ট ২৪ এ মৌমিতা ২৪'শ ভোট পেয়েছেন। এবার আসলে কেউই আমাদের আশাহত করেননি।
র্যাংকিং চয়েজ ভোটিং সিস্টেম কি আমাদের জন্য সুফল বয়ে আনলো?
মোহাম্মদ আলী: আমি বলবো, হ্যাঁ। র্যাংকিং চয়েজ ভোটিং সিস্টেম অনেক বেশি প্রয়োজনীয়। এতে কি হয়েছে যে একজন প্রার্থী একাধিক জনকে ভোট দিতে পেরেছে। ফলে একজনের পছন্দের মানুষের জন্য ভোট দিতে বাকিরাও গিয়েছে। তাছাড়া নিজের পছন্দমতো একজনকে র্যাংকিং এর প্রথমে রেখে বাকিদের অন্যান্য চয়েজে রাখা হয়েছে যেটা বাংলাদেশিদের জন্য খুবই ভালো হয়েছে। তবে যারা সিস্টেম টা বোঝেননি তারা হয়তো একটা ভোট দিয়ে বাকি ভোট গুলো থেকে সবাইকে ববঞ্চিত করেছেন।
অন্য কাউন্সিলম্যান ক্যান্ডিডেটদের জয় না পাওয়ার কারণ কি?
এস.এম. সোলায়মান: এটা অবশ্যই না। কারণ শাহানা হানিফ যেই ডিস্ট্রিক্ট থেকে লড়ছেন সেখানেও আরেকজন বাঙালি প্রার্থী ছিলেন। তিনি ১৪'শ ভোট পেয়েছেন। তাহলে শাহানা হানিফ কিভাবে এতোটা এগিয়ে গেলেন। সেখানে তো বাঙালি সসংখ্যায় অনেক কম। তিনি শুধুমাত্র বাঙালিদেরকেই টার্গেট করেননি। তিনি অন্যান্য কমিউনিটির লোকজনের কাছেও গিয়েছেন। তাদের জন্যও কাজ করেছেন। তাই শুধুমাত্র বাংলাদেশিদের জন্য বসে থাকলে হবে না।
এবার কি আশানুরূপ ভাবে মানুষ ভোট দিয়েছেন?
মোহাম্মদ আলী: চোখে পরার মতো মানুষ ভোট দিয়েছে তবুও বলবো সব মানুষ ভোট দিতে যায়নি। এবার আমরা অন্যান্য কমিউনিটির চোখে পরেছি বেশি সংখ্যক ভোট দেওয়ার জন্য।
যেই দুইজনকে আমরা বিজয়ী বলতে পারি, তারা অন্য প্রার্থীদের থেকে আলাদা কি করেছিলেন?
এস. এম. সোলায়মান: তারা এদেশীয় স্টাইলে প্রচারণা করেছেন। তারা মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে মাইকিং করেনি বা বাঙালি মতে প্রচার করেননি। তারা মেইল করে, ম্যাসেজ করে, বাসায় বাসায় লিফলেট পাঠিয়ে, ফোন করে বা ডোর নক করে নিজেদের প্রচারণা চালিয়েছেন। এটা এখানকার মানুষকে টাচ করেছেন।
বিজয়ী দু'জন থেকে বাংলাদেশী কমিউনিটি কি কি সুযোগ সুবিধা পেতে পারে?
আব্দুর রহিম হাওলাদার: অবশ্যই আমরা সুযোগ সুবিধা পেতে পারি যদি শেষ পর্যন্ত তারাই নির্বাচিত হন তাহলে আমরা এখন থেকে আমাদের চাহিদা এবং প্রয়োজন গুলো আমরা আদায় করে নিতে পারবো। বিভিন্ন ফান্ড, বিল তারা সহজেই পাস করিয়ে এনে দিতে পারবেন। তাদের আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের থেকেও একটা বেটার লাইফ পাবে।
যে প্রার্থীরা জয়ী হতে পারেননি তাদের জন্য কি বলার আছে?
গিয়াস আহমেদ: তাদেরকে বলবো আপনারা ভিন্ন ভিন্ন প্ল্যাটফর্ম তৈরি না করে একটা স্টেজে দাঁড়িয়ে ভোট চান। পরবর্তীতে ভোটাররা যাকে খুশি ভোট দিক। কিন্তু তারা আমাদেরকে ইউনাইটেড অবস্থায় দেখুক।
এই ইলেকশন থেকে আমরা কি শিক্ষা পাই?
গিয়াস আহমেদ: বাঙালি কমিউনিটি অনেক ভালো করছে। তার রেজাল্ট আমিরা ধীরে ধীরে পাচ্ছি। যুক্তরাজ্যে চতুর্থ প্রজন্ম এসে পলিটিকাল ভাবে জয়লাভ করেছে। আমরা দ্বিতীয় প্রজন্মেই সেটা পেরেছি। ব্ল্যাক কমিউনিটি কখনো ভাবেনি যে তাদের ভিতর থেকেও কেউ একজন প্রেসিডেন্ট হবেন। কিন্তু বারাক ওবামা সেটা হয়ে দেখিয়েছেন। তাই আমরাও চাইলে পারবো। আমাদের একতাবদ্ধ হতে হবে। সবাই মিলে প্রতিনিধি বাছাই করতে হবে। এবং যেভাবেই হোক তাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।