Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

‘অমুসলিমের সঙ্গে অবশ্যই সুন্দর আচরণ করতে হবে’

সাইদ রহমান

প্রকাশিত: ২২:৫৯, ২৯ জুন ২০২১

আপডেট: ১৪:০৯, ৪ জুলাই ২০২১

‘অমুসলিমের সঙ্গে অবশ্যই সুন্দর আচরণ করতে হবে’

মুফতি নোমান কাশেমি

বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত আলেম, ইসলামি চিন্তাবিদ ও গবেষক মুফতি নোমান কাশেমি। আল মারকাযুল হানাফী বাংলাদেশ-এর পরিচালক এই আলেম বর্তমানে নিউইয়র্কে বসবাস করছেন। অমুসলিমদের সঙ্গে একজন মুসলমানের সার্বিক সম্পর্ক কেমন হবে, সে বিষয়ে কথা বলেছেন চ্যানেল ৭৮৬-এর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- সাইদ রহমান

অমুসলিমদের ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গী কি?

এটা অত্যন্ত পরিষ্কার। তাদের সঙ্গে সুন্দর আচরণ করতে হবে। ইসলামে এমন কোনো বিধানের অস্তিত্ব নাই যে, মুসলমান হলে তার সঙ্গে ভালো আচরণ আর অমুসলিম হলে তার সঙ্গে খারাপ বা মন্দ আচরণ করতে হবে। কোরআন এবং হাদিসে অমুসলিমদের সঙ্গে সুন্দর আচরণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইসলামের সকল বিধিবিধান ঘেঁটে এমন কোনো বিষয় বের করা সম্ভব নয়, সেখানে নন-মুসলমিদের প্রতি ন্যূনতম অসম্মান প্রদর্শনের কথা কিংবা নিদেনপক্ষে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে বিশ্বনবীর জীবন থেকে জানতে চাই।

তিনি তো সর্বোত্তম মানব। তিনি এমন একজন মানুষ, যার আচরণ দেখে অমুসলিমরা দলে দলে ইসলামের পথে ধাবিত হয়েছে। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো অমুসলিম নাগরিককে হত্যা করল, সে জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুগন্ধি ৪০ বছরের রাস্তার দূরত্ব থেকেও পাওয়া যায়।’ (বুখারি : ৩১৬৬)। একবার রাসূল (সা.) এর পাশ দিয়ে একজন অমুসলিমের লাশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন। সাহাবিরা (রা.) বললো, এটা তো এক ইহুদির লাশ। তিনি বলেন, ‘তা কি প্রাণ নয়?’

অমুসলিমদের কাছে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার বিধান কি?

আমাদের নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) তার পুরোটা জীবন ব্যয় করেছেন ইসলামের প্রচার ও প্রসারে। তাই অবশ্যই আমাদেরকেও সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে কোনো জোর জবরদস্তি করা যাবে না। অমুসলিমদের কেউ যদি এটা অপছন্দ করে কিংবা কষ্ট পায় তাহলে দাওয়াত দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। জোর খাটিয়ে কাউকে ইসলামের পথে এনেছেন, এমন কোনো নজির রাসূল (সা.) এর জীবনে নেই।

তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক-ওঠাবসা কেমন হবে?

আর দশজন মুসলমানের সঙ্গে যেমন হবে, তেমনই। এতে কোনো পার্থক্য করা যাবে না। কোনো অমুসলিম যদি কোনো মুসলিমকে তার ঘরে দাওয়াত দেয় তাহলে সেখানে অংশগ্রহণে কোনো বাধা নেই। তবে সে যদি হারাম কোনো খাবার পরিবেশন করে, কিংবা অবৈধ কোনো কাজ করতে বলে তাহলে তা থেকে বিরত থাকতে হবে। এককথায়, সামাজিকভাবে একজন মুসলিম-অমুসলিমের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা যাবে না।

অমুসলিমদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাওয়া যাবে কিনা?

আগেই বলেছি, সামাজিক দিক থেকে কোনো পার্থক্য করা যাবে না। তবে ধর্মীয় ব্যাপারে রয়েছে ভিন্ন বিধান। অমুসলিমদের ধর্মীয় উৎসবে অংশ নেওয়া একজন মুসলমানের জন্য বৈধ নয়। কারণ তাদের উৎসবের মাধ্যমে তারা নানাভাবে আল্লাহর সাথে শরিক করে। তাই এ ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে। তবে কোনোভাবেই তাদের ধর্মীয় উৎসবে বাধা দেওয়া যাবে না।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ