
দিন রাতের হিসেবে মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যাবধানে ক্রীড়াঙ্গনে ঘটে গেলো ঐতিহাসিক কিছু ঘটনা। ১১ জুলাই, ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য দিন হয়ে থাকলো। এক ই দিনে খেলার দুনিয়ার অনেক বড় বড় ঘটনা দেখলো কোটি ভক্ত। ফুটবল, ক্রিকেট টেনিস সব দিকেই এই দিনটি একটি স্মরনীয় দিন হিসেবেই অনেক দিন মানুষের মনে থাকবে।
কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিলের নিজের ঘরের মাঠে তাদের কাছ থেকে শিরোপা ছিনিয়ে নেয়ার প্রায় অসম্ভব এক মিশনে নেমেছে আর্জেন্টিনা। ক্লাব ফুটবলে পৃথিবীর প্রায় সব কিছু অর্জন করা লিওনেল মেসির জীবনে একমাত্র অপূর্ণতা নিজের দেশের হয়ে অন্তত একটি শিরোপা। ব্রাজিল নিজের ঘরের মাঠে হাতে যেন ভুলে গেছে অন্যদিকে ফাইনালে বরাবরই আনপ্রেডিক্টেবল আর্জেন্টিনা কি পারবে এলএম১০ এর হাতে কোপা আমেরিকার শিরোপা এনে দিতে? এই অনিশ্চয়তা নিয়ে খেলা দেখতে বসে ছিলেন কোটি ভক্ত । ১-০ গোলের জয় ২৮ বছরের শিরোপা খরা কাটালো, মেসি, ডি মারিয়া, লাউতারো মার্তিনেজ, এমিলিয়ানো মার্তিনেজ দের নিয়ে এবার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখতেই পাবে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা।
বিকেলে হারারে টেস্টে অপেক্ষা করছিল শেষ দিনের রোমাঞ্চ। লড়াইটা উত্তেজনা ছড়াতে পারতো। সেটা আর হলো না। সফরের একমাত্র টেস্টটিতে পঞ্চম দিনে স্বাগতিক দল প্রতিরোধ গড়লেও ২২০ রানের বড় জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের সামনে লক্ষ্য ছিল ৪৭৭ রানের। জিততে হলে বিশ্বরেকর্ডই গড়তে হতো। বাংলাদেশের হারের সম্ভাবনা কার্যত ছিল না, তবে হারারের উইকেট ব্যাটসম্যানদের পক্ষে থাকায় ড্র করার চেষ্টা ছিল জিম্বাবুয়ের। শেষ দিনে স্বাগতিকদের হাতে ছিল ৭ উইকেট, দরকার ৩৩৭ রান। যে কোনো পিচেই কঠিন লক্ষ্য। জিম্বাবুয়ে সেই লক্ষ্য তাড়া করার চেষ্টাও করেনি। বরং ১৬৪ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর ড্রয়ের অসাধ্য সাধন করার চেষ্টা করে স্বাগতিকরা। শেষ তিন উইকেটে তারা ৩৪.৩ ওভার কাটিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ২০২০ সালের ফ্রেব্রুয়ারি থেকে ২০২১ সালের জুলাই। মহাকালের ক্যালেন্ডারের পাতায় ঝরে পড়েছে কতগুলো মাস। কিন্তু বাংলাদেশের টেস্ট ভাগ্য বদলায়নি। দীর্ঘ ১৭ মাসে একবারের জন্যও লাল বলের ক্রিকেটে জয়ের স্বাদ পায়নি মুমিনুলরা। অবশেষে খুললো ব্যর্থতার গেরো। যাদের বিপক্ষে এসেছিল সবশেষ জয়, সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই টেস্ট জিতলো বাংলাদেশ। প্রায় ১৭ মাস পর বহুল প্রত্যাশিত বাংলাদেশের টেস্ট জয়। অনেক ঘটনাবহুল এই ম্যাচে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় নিঃসন্দেহে সাইলেন্ট কিলার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের অবসরের ঘোষণা।
এদিকে ফরাসি ওপেনের পর উইম্বলডনও জিতলেন নোভাক জোকোভিচ। সার্বিয়ান টেনিস তারকা রোববার পুরুষ এককের ফাইনালে ইতালির মাত্তেয় বেরেত্তিনিকে ষষ্ঠবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন এই টুর্নামেন্টে। দুর্দান্ত ফাইনালে প্রথম সেট হারলেও তারপর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান জোকোভিচ। পরপর তিনটি সেট জিতে খেতাব নিজের দখলে নেন তিনি। এই জয়ের ফলে রজার ফেদেরার ও রাফায়েল নাদালের সঙ্গে একই আসনে বসলেন জোকোভিচ। বিশ্বের তিন টেনিস মহাতারকার দখলেই এখন ২০টি করে গ্র্যান্ডস্ল্যাম!
এই তো মাত্র বছর তিনেক আগে যখন দায়িত্ব নিলেন, তখন ব্যর্থতায় হাবুডুবু খাচ্ছে ইতালির ফুটবল। বাছাইপর্বে আটকে গিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপ টাও মিস হলো। নিজেদের ইতিহাসে ৬০ বছরের মধ্যে প্রথমবার টুর্নামেন্টের বাইরে থেকে ফিফা বিশ্বকাপ দেখতে হয়েছে ইতালিকে! ঠিক সেই অবস্থায় কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন রবার্তো মানচিনি। প্রাথমিকভাবে চুক্তি করা হয় ২০২০ সাল পর্যন্ত। শর্ত একটাই, ইউরো কাপের বাছাইপর্ব পার করতে হবে দলকে। বাছাইয়ে তিন ম্যাচ হাতে রেখেই ইউরোর টিকিট নিশ্চিত করে আজ্জুরিরা আর মানচিনি পান ২০২২ পর্যন্ত ইতালির কোচের দায়িত্ব পেলেন। তবে দলকে শুধু ইউরোতে উঠিয়েই ক্ষান্ত দেয়ার পাত্র ছিলেন না মানচিনি। তার মাথায় ছিল ভিন্ন পরিকল্পনা। তাই তো ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছেন আত্মবিশ্বাসী ও ঐক্যবদ্ধ একটি দল। যারা রোববার দিবাগত রাতে জিতে নিয়েছে নিজেদের ইতিহাসের দ্বিতীয় ইউরো শিরোপা। সবমিলিয়ে গত ৩৪ ম্যাচ ধরে হারে না ইতালি!
চ্যানেল-৭৮৬'এ নিউজ পাঠাতে ই-মেইল করুন [email protected] এই ঠিকানায়। আপনার পণ্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপনের জন্য কল করুন (212) 729-0610, +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।