Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

নিউইয়র্কে সাংবাদিক মোহাম্মদ উল্লাহর ৮০তম জন্মবার্ষিকী পালিত

ইমরান আনসারী

প্রকাশিত: ২২:২০, ২৫ নভেম্বর ২০২১

নিউইয়র্কে সাংবাদিক মোহাম্মদ উল্লাহর ৮০তম জন্মবার্ষিকী পালিত

অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হল নিউইয়র্কের প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহম্মদ উল্লাহর ৮০তম জন্মবার্ষিকী। নানা শ্রেনী পেশার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। বিশেষ করে ৮০ উর্ধ্ব বেশ কয়েকজন ব্যাক্তি এসেছিলেন তাঁকে সম্মান জানাতে ।

নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বাংলা সংবাদপত্রের বিকাশে তিনি রেখেছেন অনন্য সাধারণ ভূমিকা। “প্রবাসী’ পত্রিকার মাধ্যমে বাংলাদেশি কমিউনিটি বিনির্মাণে রাখেন অবিস্মরনীয় ভূমিকা।

তিনিই প্রথম বাংলাদেশি সাংবাদিক যিনি ইস্টার্ন নিউজ এজেন্সির পক্ষ থেকে  বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর জাতিসংঘের স্বীকৃতির মূহুর্ত ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া প্রথম ভাষন কাভার করার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন।

সবচেয়ে বড় কথা নিউ ইয়র্কে এসে জানতে পারলাম তিনি আমার আত্মীয়। এর পর থেকেই দেখা সাক্ষাতে , পারিবারিক পোগ্রামে আন্তরিকতা। গিয়েছিলাম অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য আমার ভগ্নিপতি আবদুর রব চৌধুরী মিরন ভাইয়ের আমন্ত্রণে।

আমি বর্তমানে মধ্য বয়সি সাংবাদিক হলেও আদর্শিক ভাবে আমি ইসলাম ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদকে ধারণ করি। সেই বিচারে সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ ভাইয়ের সাথে আমার আদর্শিক বৈপরিত্য রয়েছে। কিন্তু তা স্বত্বেও আমার প্রতি উনার সম্মানবোধ রীতিমত প্রশংসার যোগ্য।

আত্মীয়তার সূত্র ধরেও কখনও তুমি সম্বোধন করে কথা বলেননি।  সবসময়ই আপনি । কিন্তু আজকাল কি নিউইয়র্ক কি বাংলাদেশ সবাই বলা নেই কওয়া নেই তুমি সম্বোধন করা শুরু করেন। এটি তারাই বেশি করেন  যাদের অনেক পয়সা আর শিক্ষার জোর অনেক কম।

যাহোক ফিরে আসি সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ সাহেবের কথায়। আমি খেয়াল রাখছিলাম উনার ৮০তম জন্ম দিনটি তিনি কিভাবে অতিবাহিত করেন। মঞ্চে যখন তাকে আনা হল তার মনটা খুবই গম্ভীর। সবাই বারবার বলছিলেন একটু হাসেন।

তখন বক্তৃতার শুরুতেই তিনি বললেন, নিউ ইয়র্কবাসী আমাকে যে সম্মান দেখিয়েছেন এতে আমার হাসারই কথা কিন্তু আমি আজ আমার জীবনের ক্ষেরো খাতা খুলে বসেছি। তিনি অকপটে স্বীকার করেন তিনি একজন মেট্রিক পাশ সাংবাদিক। এটি যেনো বিশ্বাসই হচ্ছিলনা।

কারণ তিনি ইস্টার্ন নিউজ এজেন্সিতে ইংরেজিতে সাংবাদিকতা করতেন। তিনি আরো অকপটে স্বীকার করেন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনের সুযোগ থাকা স্বত্ত্বেও স্ত্রী ও দু’মাস বয়সি ছেলের মায়ায় যুদ্ধে যোগদান করতে পারেন নি। একথা বলে তিনি হাওমাও করে কেঁদে ফেলেন।

তিনি বলেন, এর জন্য আমি নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারব না। এই যে সরল স্বীকার উক্তি বর্তমান সমাজে অত্যন্ত বিরল। তাঁর বক্তব্যে উঁঠে আসে সাংবাদিকতা পেশায় থাকতে গিয়ে কি নিদারুণ অর্থকষ্টে তাঁকে পরিবার নিয়ে জীবন ধারণ করতে হয়েছে।

বিদ্যুত্‌ বিল দিতে না পারায় নিউ ইয়র্কে তাঁর বাসার বিদ্যুত্‌ সংযোগ কেঁটে দেয়া হয়েছিল। সেই সব দিনে যারা তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তাদের প্রত্যেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।  

আসলে একজন সাংবাদিক তাঁর পেশার মান রক্ষা করতে  গিয়ে কি ধরণের  সংগ্রাম করেন তা হয়তো অনকেই  খবর রাখেন না। সবমিলিয়ে পুরো অনুষ্ঠানটি  ছিল এক অনন্য সাধারণ আয়োজনে ভরা। অবশেষে দোয়া করি আল্লাহ যেন তাঁর নেক হায়াত দান করেন।


চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected]। আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ