Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

‘টেক ব্যাক নয়, বাংলাদেশের মানুষ সামনে আগাতে চায়’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:৩৬, ৬ নভেম্বর ২০২৩

‘টেক ব্যাক নয়, বাংলাদেশের মানুষ সামনে আগাতে চায়’

ক্রমেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে বাংলাদেশের রাজনীতি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মুখোমুখি অবস্থানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। এমন রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে চ্যানেল ৭৮৬-এর মুখোমুখি হয়েছেন নিউইয়র্ক মহানগর আ.লীগের সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি হঠাৎ অশান্ত হয়ে উঠল কেন?
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপিসহ বিরোধী কয়েকটি দলকে ঢাকায় যে সমাবেশ করতে দেওয়া হয়েছিল, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সেটা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে পারেনি তারা। সেখান থেকেই অশান্ত হয়ে উঠেছে সার্বিক পরিস্থিতি। সমাবেশের নাম দিয়ে অতীতের মতো জ্বালাও-পোড়াও সংস্কৃতি ফিরিয়ে এনেছে তারা। বিএনপি একটা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চেয়েছিল, যেটা জনগন ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের গণতন্ত্রের কথা বলে থাকেন। এর মানে হলো দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে, পেছনের দিকে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

এখন তো লাগাতার অবরোধ চলছে...।
সেটা চলছে নামকাওয়াস্তে। মানুষ আসলে এখন আর বিএনপির কোনো কর্মসূচিকে সমর্থন করছে না। টেলিভিশন খুললেই দেখা যায়, সবকিছু স্বাভাবিক। যানবাহন চলছে, মানুষও নিঃসঙ্কোচে চলাফেরা করছে। শুধু চোখেমুখে গামছা পেছিয়ে কিছু লোক গাড়িতে আগুন দিচ্ছে। এভাবে বেশিদিন চলতে পারে না। সাধারণ মানুষ অচিরেই এগুলোর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে।

মানুষ আওয়ামী লীগকে কেন গ্রহণ করবে?
রাজনীতির মূল লক্ষ্য হলো মানুষের উন্নয়ন। আওয়ামী লীগ সরকার ঠিক এই কাজটিই করছে। মেট্রোরেলের মাধ্যমে মানুষ এখন তিন ঘণ্টার পথ যায় মাত্র ৩০ মিনিটে। কিছুদিনের মধ্যে বাংলাদেশ প্রবেশ করবে পাতাল রেলের যুগে। সুতরাং এগুলোর পরিবর্তে মানুষ কেন জ্বালাও-পোড়াওকে গ্রহণ করবে? বিএনপি কীভাবে আশা করে যে, মানুষ তাদের রাজনীতিকে গ্রহণ করবে?

কিন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের তো নাভিশ্বাস উঠেছে…।
সারা পৃথিবী আজকে একটা মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এটা তো শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়, পুরো পৃথিবীর সমস্যা। করোনাভাইরাস থেকে উঠে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই বেজে উঠেছে যুদ্ধের দামামা। সাধারণ মানুষ হয়তো এই বিষয়গুলো ভালোভাবে জানে না। এই আমেরিকায়ও আমরা এখন একটা ডিম কিনি ৪ ডলার দেয়, যেটা আগে ছিল ২ ডলার। বাংলাদেশের পরিস্থিতি কিন্তু এরচেয়ে ভালো, দাম বাড়লেও দ্বিগুণ হয়ে যায়নি। অন্যদিকে এটাও মানতে হবে যে, বাংলাদেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। তাই এসব ইস্যু তৈরি করে বাংলাদেশের মানুষকে আর বোকা বানানো যাবে না।

নির্বাচনকে সামনে রেখে কূটনৈতিক তৎপরতা কীভাবে দেখছেন?
কূটনীতিকরা যেভাবে দৌড়ঝাপ করছেন, সেটা দৃষ্টিকটু। তাদের কথাবার্তায় মনে হয়, যেন তারা বাংলাদেশের ভোটার। জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী একজন কূটনীতিকের যে আচরণ করার কথা, সেটার লংঘন আমরা দেখতে পাচ্ছি বাংলাদেশে। কূটনীতিকরা অহেতুক বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করছেন। তাছাড়া বাংলাদেশ এখন আর ১৯৭৫ সালের অবস্থায় নেই যে, এখানে যা ইচ্ছা তাই ঘটানো যাবে।

জো বাইডেনের কথিত উপদেষ্টা সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কী?
বিএনপি রাজনৈতিকভাবে কতটা দেউলিয়া হয়ে পড়েছে, এই ঘটনা তার একটা মাপকাঠি হতে পারে। মিয়ান আরাফি মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যে একটি দোকানের সামান্য একজন কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন। সে মানসিক বিকারগ্রস্ত হতে পারে। তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছে অনেক আগেই। এমন একটা লোককে তারা বানিয়েছে বাইডেনের উপদেষ্টা। আর বাংলাদেশের সাংবাদিকরাও একবার তথ্যটা ক্রসচেক করতে পারলেন না! গুগল করলেই তো পাওয়া যায় যে, লোকটা কে বা কী…। এগুলো উন্মাদের মতো কার্যকলাপ ছাড়া আর কী হতে পারে!

বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর লক্ষ্য কী?
প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দলের উচিত জনগনের স্বার্থের দিকে লক্ষ্য রেখে রাজনীতি করা। কোনো দলকে যদি বিদেশি প্রভুরা এসে ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়, তাহলে সে তো তখন জনগনের স্বার্থ দেখবে না, ওই বিদেশি প্রভুদের স্বার্থ দেখবে। বিএনপি এখন তাকিয়ে আছে, তাদেরকে কেউ এসে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। এটা তো সম্ভব নয়, বাংলাদেশ এখন আর তেমন কোনো দূর্বল দেশ নয়।

প্রধান দুই দলের এমন মুখোমুখি অবস্থানের কারণে অনেকে তৃতীয় শক্তির আগমনের কথা বলছেন…। 
যেহেতু বিএনপি টের পেয়ে গেছে যে, তারা আর ক্ষমতায় আসতে পারছে না, সেহেতু তারা চাচ্ছে, তৃতীয় কেউ হলেও ক্ষমতায় আসুক। বিএনপির এজেন্ডা এখন একটাই, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে বের করতে হবে। যে কোনো মূল্যে দেশটাকে আবার পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নিতে হবে। তবে সেটা সম্ভব হবে না। মানুষ এখন অনেক সচেতন।

তৎপর হওয়া বিদেশিদের প্রতি আপনি কী আহ্বান জানাবেন?
আমরা বিদেশিদের বরাবরের মতোই আহ্বান জানিয়ে আসছি, তারা যেন বিএনপির মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত না হয়। তবে কোনো কোনো কূটনীতিকের মাইন্ডসেট এমনটাও থাকতে পারে যে, উন্নয়ন-অগ্রগতিতে যেহেতু বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, অন্যদের ছাড়িয়ে যাচ্ছে, তাই দেশটাকে থামিয়ে দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র বলেন আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেন, এরা নিজেদের স্বার্থের জন্যই অন্য দেশের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। বিষয়টাকে এতটা ভালোভাবে দেখার কিছু নেই। এই যে একজন পুলিশ অফিসারকে পিটিয়ে হত্যা করা হলো, এ নিয়ে কিন্তু কূটনীতিকদের কোনো বিবৃতি চোখে পড়লো না। এক্ষেত্রে তারা চোখে কিছু দেখতে পারছে না।

বিএনপির প্রতি কী বার্তা দেবেন?
বার্তা একটাই, জ্বালাও-পোড়াও বাদ দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। কারণ ক্ষমতার পালাবদলের মাধ্যম একটাই—নির্বাচন। এর কোনো বিকল্প হবে না। সংবিধানের বাইরে গিয়ে কিংবা অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। আর আন্দোলন যদি করতেই হয়, তাহলে সেটা হতে হবে অসহিষ্ণু। বাসে আগুন দিলে জেলে যেতে হবে, মামলা খেতে হবে—এটাই স্বাভাবিক।


চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ