চ্যানেল ৭৮৬ এর জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘এটর্নি রাজু মহাজন প্রেজেন্টস এনআরবি আইকন’। প্রতি সপ্তাহে একজন আইকনিক ব্যক্তিত্বকে হাজির করা হয় এই অনুষ্ঠানে। উপস্থাপনায় থাকেন জাহান অরন্য। এবারের পর্বের অতিথি ছিলেন ডিস্ট্রিক্ট-২৪ এর অ্যাসেম্বলিম্যান প্রার্থী মিজান চৌধুরী। আগামী ২৮ জুনের নির্বাচন নিয়ে তার আশাবাদ, প্রতিশ্রুতিসহ বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন-
কেমন আছেন?
ভালো আছি। আমাকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ। এই অনুষ্ঠানের সকল দর্শকদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা।
নির্বাচনের আর সপ্তাখানেক বাকি। নিশ্চয়ই খুব ব্যস্ত সময় পার করছেন?
হ্যাঁ, খুব ব্যস্ত সময় পার করছি। প্রতিটা ভোটারের দরজায় যাওয়ার চেষ্টা করছি। আমার ক্যাম্পেইন টিম দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া আরও বিভিন্ন উপায়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রতিটা ভোটারের কাছে আমি আমার মেসেজ পৌঁছাতে চাই।
জয়ের ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী?
বলতে পারেন শতভাগ আশাবাদী। ভোটারদের কাছে যখন যাচ্ছি, তারা দারুণ সাড়া দিচ্ছেন। ভোটাররা খুব এক্সাইটেড। আমার যে টার্গেট ভোটার রয়েছে, তারা সবাই ইতিবাচক। আশাকরি, ভূমিধ্বস বিজয় পাবো। আমার ক্যাম্পেইন টিমও প্রতিদিনের কাজ শেষে তাদের ইতিবাচক অভিজ্ঞতার কথা জানাচ্ছেন।
ভোটারদের কাছে কী কী প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন?
আমি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি পাবলিক সেফটি বিষয়ে। আপনারা সবাই জানেন, লাস্ট সিক্স মান্থ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য তো আছেই, তবে নিউইয়র্কে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো হামলার ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশি কমিউনিটির অনেকে এসব শিকার হয়েছেন। কিন্তু প্রতিকার মিলছে খুবই কম। আমি নির্বাচিত হলে এসব হামলা বন্ধে সাধ্যমতো চেষ্টা করবো।
এভাবে হামলা বৃদ্ধির পেছনে কোন কারণটি মূখ্য বলে মনে করছেন?
বেইল রিফর্ম মানে জামিন আইনের সংস্কার একটা ভাইটাল ইস্যু। দাগি অপরাধীরা অপরাধ করে গ্রেপ্তার হতে না হতেই জামিন নিয়ে বেরিয়ে যান। আমি মনে করি, এই অবস্থাটা তাদেরকে অন্যায় কাজে উৎসাহ যোগাচ্ছে। এই জামিন আইনকে সংস্কার করতে হবে। এটাকে এমনভাবে কঠোর করতে হবে, যেন অপরাধীরা চাইলেই জামিন নিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারেন।
ডিস্ট্রিক্ট-২৪ থেকে আপনার প্রতিপক্ষ যিনি, তার ব্যাপারে কী বলবেন?
একটু আগে যে বেইল রিফর্মের কথা বললাম, আমার প্রতিপক্ষ সেই রিফর্মের কো-স্পন্সর। এর মধ্য দিয়ে তিনি দাগী আসামিদের জামিনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। অথচ তার এলাকাতেই একের পর এক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। আমি আমার প্রতিপক্ষের ব্যাপারে নেতিবাচক কথা বলতে চাই না। ভোটাররা স্বাধীন, তারা যে কোনো একজনকে বেছে নিতে পারেন। অবশ্য একটি কথা না বললেই নয়, অনেকে হয়তো বলবেন, মিজান চৌধুরীর প্রতিপক্ষ যিনি তাকে তো চাইলেই পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে আমি একটি কথাই বলতে চাই, কমিউনিটির জন্য কাজ করা আর বার্থডে অনুষ্ঠানে এসে ছবি তোলা এক কথা নয়।
পাবলিক সেফটি ছাড়া আর কীসের ওপর জোর দিচ্ছেন?
কমিউনিটি পুলিশিং নিয়ে কাজ করতে চাই। তাদের জন্য ফান্ড জোগাড় করতে চাই। এছাড়া কমিউনিটিতে ইয়ুথ এমপাওয়ারমেন্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এমন উন্নত একটা সমাজে যুবকরা নেশা করে জীবন নষ্ট করে ফেলছে, এটা খুবই দুঃখজনক। আমি তাদের সেই অবস্থান থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবো। এছাড়া আমাদের বাংলাদেশি কমিউনিটির ইয়ুথরা চাকরি পাচ্ছে না। অথবা পেলেও একটা অড জব করছে। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করবো আমি।
স্পেসেফিক্যালি বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য কী করবেন?
আমাদের কমিউনিটি কিন্তু সিটি বা স্টেটের কোনো ফান্ড পায় না। এটা মেনে নেওয়ার মতো নয়। আমরা অনেক প্রোগ্রাম করছি, নিজেদের মধ্যে অনেক সংগঠন আছে। কিন্তু এভাবে নিজেদের মধ্যে আটকে থাকলে তো আর এদেশের মেইনস্ট্রিম রাজনীতির সঙ্গে মেশা যাবে না। স্টেট ও সিটি থেকে শত শত রকমের ফান্ড দিচ্ছে প্রশাসন, কিন্তু আমরা বাংলাদেশিরা সেসব পাচ্ছি না। এ বিষয়টা নিয়ে কাজ করবো। আমাদের কমিউনিটির অনেকে স্মল বিজনেস করে। প্রশাসনে তাদের প্রতিনিধি না থাকার কারণে তারা অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমি নির্বাচিত হলে তাদের সত্যিকারের প্রতিনিধি হয়ে কাজ করবো। আরেকটা বিষয় হলো, বাংলাদেশি কমিউনিটিতে নেক্সট জেনারেশন লিডারশিপ পাইপলাইন তৈরি করতে চাই। এখন অনেক লিডার আছেন, কিন্তু পরবর্তী নেতৃত্ব নিয়েও ভাবতে হবে।
বাংলাদেশি কমিউনিটিতে অনেক মতপার্থক্য আছে, যা নির্বাচনের ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ ব্যাপারে কী বলবেন?
হ্যাঁ, আমাদের মধ্যে দলাদলি আছে, এটা একটা নিকৃষ্ট বাস্তবতা। ভালো কিছু করতে চাইলে অবশ্যই এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তবে এবার একটা মজার ব্যাপার হলো, বাংলাদেশি ক্যন্ডিডেটরা কেউই কারও বিরুদ্ধে নেই। এবার যতজন বাংলাদেশি ক্যান্ডিডেট আছেন তারা কাউকেই অন্য আরেকজন বাংলাদেশিকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে না। এটা একটা সুযোগ। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশি আমেরিকানদের বিজয়ী করে আনতে হবে।
কিশোররা চাইলেই অস্ত্র পেয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে কী বলবেন?
আমেরিকা পৃথিবীর মোস্ট শক্তিশালী দেশ। কিন্তু এসব ঘটনা আমেরিকাকে দূর্বল করে দিচ্ছে। এটা খুবই বাজে একটা ব্যাপার। কয়েকদিন আগেও বাফেলোতে একটি ঘটনা ঘটেছে। অবুঝ বাচ্চারা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাচ্ছে। আমার দুটো বাচ্চা আছে। একটা হাইস্কুলে, আরেকটা প্রাইমারিতে। তাদের জন্যও আমার টেনশন হয়। আপনি জেনে অবাক হবে, আমেরিকাতে একটা বারে গেলে আইডি দেখাতে হয়। সিগারেট কিনতে গেলে আইডি দেখাতে হয়, বয়সসীমা জানাতে হয়। অথচ রাইফেল কিনতে গেলে এসব লাগে না। এভাবে চলতে পারে না। আমি স্টেট লেবেলে এসেম্বলিম্যান হলে ফেডারেল লেভেলে যারা আছে তাদের সঙ্গে এ নিয়ে আলাপ করবো।
ভোটারদের উদ্দেশে কী বলবেন?
আমি একটা কথাই বলবো, আসুন, ভোট দিন। কেন আপনি ভোট দেবেন না? এটা তো আপনার নাগরিক অধিকার। বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে ভোটদানে অনীহা আছে। এই মেন্টালিটি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ভোট দিতে কিন্তু বেশি সময় লাগে না। কেউ চাইলে আর্লি ভোটিংয়ে অংশ নিতে পারেন। বাসার পাশেই পুল আছে। আশাকরি, এবার কোনো ভোটার ভোটদানে বিরত থাকবেন না।
চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected]। আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।