মাওলানা কাজী আব্দুল মুকিত
চলে এসেছে পবিত্র ঈদুল আজহা। চলছে কোরবানির প্রস্তুতি। কিন্তু কোরবানির তাৎপর্য, কাদের জন্য ওয়াজিব, যুক্তরাষ্ট্রে কোরবানির বিধান-এসব প্রয়োজনীয় নানা বিষয়ে চ্যানেল-৭৮৬ এর মুখোমুখি হয়েছিলেন দারুস সালাম মসজিদ নিউইয়র্কের খতিব ও ইমাম এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব কাজী আব্দুল মুকিত।
কোরবানি কী?
মাওলানা কাজী আব্দুল মুকিতঃ কোরবানি হলো আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি অর্জনের অনন্য এক মাধ্যম। এতে আছে আত্মত্যাগের মহিমা। সেটা পশু উৎসর্গের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এককথায় আল্লাহবিহীন ভালবাসা অন্তর থেকে বের করে আল্লাহ’র প্রতি উৎসর্গ করা। আর তার বড় উদাহরণই হলো কোরবানি।
কোরবানি কাদের জন্য ওয়াজিব:
মাওলানা কাজী আব্দুল মুকিতঃ প্রাপ্তবয়স্ক, স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন, কিংবা যদি ‘নিসাব’ পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়ে থাকেন, তাঁদের পক্ষে কোরবানি ওয়াজিব। নিসাব হলো সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা এর সমমূল্যের নগদ টাকা ও ব্যবসার পণ্য বা সম্পদ।
ভাগে কোরবানির বিধান কি?
মাওলানা কাজী আব্দুল মুকিতঃ উট-গরু-মহিষ ৭ ভাগে কোরবানি দেয়া যায়। তবে দুম্বা-খাসি-ভেড়া একজনকে দেয়ার বিধান আছে।
মৃত ব্যক্তির নামে কি কোরবানি দেয়া যায়?
মাওলানা কাজী আব্দুল মুকিতঃ একের অধিকের নামে কেউ যদি কোরবানি দেয় তাহলে এর বিধান আছে। অর্থাৎ, সেসময় মৃত ব্যক্তির নামে দেয়া হয়। স্ত্রী বা পরিবারের জীবিত কারও নাম দেয়ার পরই কেবল মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি দেয়ার বিধান আছে।
যুক্তরাষ্ট্রে কোরবানির নিয়ম সম্পর্কে জানাবেন?
মাওলানা কাজী আব্দুল মুকিতঃ বাংলাদেশের মতো নিয়ম এখানে নেই। এখানে সরকারের নির্ধারিত স্থানেই কেবল পশু কোরবানি দিতে হয়। কোরবানির পর তা সেই মাংস খাওয়া উপযোগী কিনা-তা পরীক্ষা হয়। এজন্য বেশকিছু পদক্ষেপ আছে। তা হলো সরকার অনুমতি স্থান, হেলথ অ্যাডমিনিস্ট্রাশন, হেলথ এমপ্লয়ির তদারকি। কোরবানির ক্ষেত্রে গুলির পর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এমপ্লয়িরা বিসমিল্লাহ বলে জবাই করে। আবার পশুর মাথায় আঘাতের পর জবাই কিংবা জমিনে ফেলে জবাই করার বিধান আছে।
গুলি করে কোরবানির বিষয়ে ইসলাম কি বলে?
মাওলানা কাজী আব্দুল মুকিতঃ পশুর ওজন অনেক বেশি। কোরবানি তো দিতে হবেই। হাত-পা বাধা দূরহ কাজ। লাইভ রিস্ক আছে। সঠিক প্রক্রিয়া না জানায় দুর্ঘটনা ঘটে। তাই, আঘাতের উদ্দেশ্য আঘাত করা হয়, সহায়ক হিসেবে গুলি করা। এটা জায়েজ।
যুক্তরাষ্ট্রে মাংস বিতরণ হয় কিভাবে?
মাওলানা কাজী আব্দুল মুকিতঃ এদেশে সিংহভাগই বাংলাদেশে দেয়। আসলে সন্তানকে কোরবানির তাৎপর্য জানানো, প্রথাটা জারি রাখার জন্য অনেকে দেয়। অনেকে নন প্রফিট অর্গানাইজেশনকে পয়সা দেয়। তারা গরীর দেশগুলোতে সেই টাকায় পশু জবাই দেয়। অনেকে সীমিত মাংস রেখে আত্মীয়দের দিয়ে দেয়।
কোরবানি দেয়ার কোন সময়সীমা কি আছে?
মাওলানা কাজী আব্দুল মুকিতঃ ১০ জিলহজ শহরে কোথাও ঈদের জামাত হওয়ার পর এই শহরে কোরবানি করা যাবে, ১২ জিলহজ্ব মাগরীবের পূর্ব পর্যন্ত। আর গ্রামে যেখানে ঈদ অথবা জুমার নামাজ আদায় হয় না সেখানে ১০ জিলহজ্ব সুবহে সাদেক থেকেই কোরবানি দিতে পারবে ১২ জিলহজ্ব সুযাস্ত পর্যন্ত।এবং যদি কোথাও কোরবানি করার জন্য এজেন্ট নিয়োগ করা হয় তবে সতর্ক থাকতে হবে যে কোরবানীর নির্ধারিত সময়ের আগে যেন পশু জবাই না করা হয়।
চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।