Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

দোষ গরুর মাংসের নয়, দরকার নিয়ন্ত্রণ

জাকির জাহিদ

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ২২ জুলাই ২০২১

দোষ গরুর মাংসের নয়, দরকার নিয়ন্ত্রণ

সারা বছর সীমিত পরিমাণে মাংস খেলেও কোরবানির ঈদে মাংস খাওয়ার পরিমাণ একটু বেড়েই যায়। গরুর মাংসকে বলা হয় রেড মিট। এই রেড মিটে স্যাচুরেটেড ফ্যাট (সম্পৃক্ত চর্বি) এবং কোলেস্টেরল থাকে, যার কারণে অনেক ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা থাকে। বিশেষ করে গ্যাস্ট্রিক, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, হাই কোলেস্টেরল বা স্থূলতার সমস্যায় যারা ভুগছেন কিংবা এসব রোগের প্রাথমিক লক্ষণ আছে তাঁরা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রেড মিট খেয়ে বিপদ ডেকে আনতে পারেন।
তবে, লাল মাংস প্রাণিজ আমিষের সবচেয়ে উত্তম উৎস। একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের দিনে ৫৫ গ্রাম এবং প্রাপ্তবয়স্ক নারীর দৈনিক ৪৫ গ্রাম আমিষ খাওয়া উচিত। কাজেই মাংসের সবটুকুই ক্ষতিকর নয়। খারাপ হলো এর চর্বি। চর্বি যথাসম্ভব ফেলে দিয়ে আমিষটুকু রেখে খেলে সবচেয়ে ভালো। দরকার মাত্রাজ্ঞান, যাতে অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ করে না ফেলি।

স্বাস্থ্যের ঝুঁকি পুরোটাই নির্ভর করে আপনার রসনার নিয়ন্ত্রণের ওপর। গরুর মাংস খেলে ক্ষতির আশংকা নিয়ে অনেকের মধ্যে কিছু অমূলক ভীতি আছে। নিয়ম মেনে পরিমিত রেড মিট খেলে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়ানো যায়।
গরুর মাংসে কোলেস্টেরলের মাত্রা কেমন
দৈনিক গরুর মাংস খাওয়ার নিরাপদ মাত্রা হলো ৩ আউন্স বা ৮৫ গ্রাম। ৩ আউন্স মাংসে আছে মোট ২০০ কিলো ক্যালরি শক্তি যা শরীরে দৈনিক মাত্র ১০ ক্যালরি শক্তির জোগান দেয়। এই ৩ আউন্স মাংসে কোলেস্টেরল থাকে ৫৩ মিলিগ্রাম। একজন সুস্থ মানুষের দৈনিক নিরাপদ মাত্রা হলো ৩০০ মিলিগ্রাম এবং হৃদরোগীদের জন্য ২০০ মিলিগ্রাম। তাই অন্তত তিন আউন্স গরুর মাংস খাওয়া নিরাপদ।

কোরবানির মাংস নিয়ে বাড়তি সতর্কতা
যেহেতু কোরবানি ঈদে মাংস খাওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়, তাই কিছু বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার।

১. আপনার শারীরিক অবস্থা এবং বয়স বুঝে মাংস পরিমিত খেতে হবে। রাতে গরুর মাংস এড়িয়ে চলাই ভালো।

২. কোরবানির মাংস রান্না বা ফ্রিজে রাখার আগে ভালোভাবে ধুয়ে, রক্ত পরিষ্কার করে নিতে হবে। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় মাংস বেশিক্ষণ বাইরে রাখলে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে। ফ্রিজে সংরক্ষণ করা সম্ভব না হলে উচ্চতাপে মাংস জ্বাল দিয়ে রাখতে হবে। ছয় ঘণ্টা পরপর জ্বাল দিয়ে রাখা ভালো।

৩. রান্নার আগে মাংসের চর্বি কেটে আলাদা করে ফেলুন। এছাড়া মাংসের ভেতরে যে চর্বি আছে সেটি গলাতে গরম পানিতে মাংস সেদ্ধ করে নিতে পারেন।

৪. রান্নার সময় মাংসের টুকরোগুলো ছোট করে কেটে টক দই, লেবুর রস, সিরকা (ভিনেগার), পেঁপে বাটা দিয়ে মেখে (মেরিনেট) রাখলে যেমন কম সময়ে মাংস সেদ্ধ হয়, তেমনি চর্বির ক্ষতিকর প্রভাব অনেকটাই কাটানো যায়।

৫. মাংস অল্প তেলে রান্না করতে হবে। অলিভ অয়েল হলে সবচেয়ে ভালো।

৬. এক বেলা মাংস খেলে অন্য বেলা সবজি, মাছ খাওয়ার চেষ্টা করুন। একসঙ্গে কাবাব, গ্রিল, বারবিকিউ, স্টেক, ভুনা মাংস, কলিজা—সব খেতে হবে এমন কোনো কথা নেই।

৭. মাংসের পুর দিয়ে তৈরি ভাজা কোনো পদে তেল বেশি মনে হলে খাওয়ার আগে কিচেন টিস্যুতে বাড়তি তেলটা শুষে নিতে পারেন।

৮. ক্যালরি মেপে খেতে হলে রসনা সংযত করতেই হবে। এক দিনেই অনেক মাংসের পদ রান্না করবেন না, খাবেনও না। একেক দিন একেক পদের স্বাদ নিন। মাংস যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে অনেক দিন পর্যন্ত তো খেতেই পারেন।


চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ