Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

পাহাড়ের সৌন্দর্য পাহাড়ি বনমোরগ

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২১:৫৫, ৭ জানুয়ারি ২০২২

পাহাড়ের সৌন্দর্য পাহাড়ি বনমোরগ

চা গাছের ফাঁক দিয়ে সকালের হালকা আলো। এর মাঝে প্রতিদিনের মতো নিজস্ব তেজদীপ্ততা জানান দিয়ে চলেছে ‘পাহাড়ি বনমোরগ’। এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে, কিংবা এক টিলা থেকে অন্য টিলায় প্রতিধ্বনিত হচ্ছে অসম্ভব চমৎকার এই ডাক! পাহাড়ি বনমোরগে ডাকা এই স্থানগুলো যেন এককথায় মনোমুগ্ধকর। 

‘পাহাড়ি বনমোগরগুলো যখন ডাকে তখন দারুণ এক অনুভূতি হয়। ভোরের দিকে চা বাগানের বাংলোতে বসে এই ডাক শুনতে পাই। সত্যি এটা দারুণ এক অনুভূতি…’ এমন কথা জানালেন চা বাগানের সিনিয়র টি-প্লান্টার এবং পরিবেশপ্রেমী ইবাদুল হক।

 

বনমোরগের ডাকের সময় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভোরে এবং সন্ধের আগে এরা উচ্চস্বরে ডাকে ‘কুক-কুরু-কু, কুক-কুরু-কু…।’

পাহাড়ি বনমোরগের ইংরেজি নাম Red Junglefowl এবং বৈজ্ঞানিক নাম  Gallus gallus। এদের লাল মাথা, লাল উজ্জ্বল ঝুঁটি এবং নিচের ঝুলন্ত লাল লতিকা দারুণ সৌন্দর্য ছড়ায়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং প্রখ্যাত বন্যপ্রাণী গবেষক ড. মনিরুল এইচ খান বলেন, ‘পুরুষ বনমোরগটির শরীর হয় জ্বলজ্বলে লাল রঙের। যা সহজে দৃষ্টি আকর্ষক করে। আর স্ত্রী বনমোরগির হয়ে থাকে বাদামি রঙের। পুরুষটি স্ত্রী অপেক্ষা বড়। পুরুষটির দৈর্ঘ্য ৬৫ থেকে ৭৫ সেন্টিমিটার এবং স্ত্রীর দৈর্ঘ্য ৪০ থেকে ৪৫ সেন্টিমিটার।’  

তিনি আরো বলেন, ‘এই বনমোরগ-বনমোরগী থেকে আমাদের গৃহপালিত মোগর-মোরগিদের পোষ মানানো হয়েছে। পাহাড়ি বনমোরগগুলো খুব স্বাভাবিকভাবে উড়তে পারে। তবে আমাদের গৃহপালিত মোগরদের খুব কমই উড়তে দেখা যায়। পুরুষ বনমোরগগুলো স্ত্রী বনমোরগী থেকে অপেক্ষাকৃত সুন্দর হয়ে থাকে। গৃহপালিত মোরগগুলোও তাই। আর যেগুলো মাঝে বিভিন্ন ভেরাইটি চলে এসেছে ওগুলো ততটা কালারফুল হয়না।’

প্রাপ্তিস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একমাত্র উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চল ছাড়া এরা সব বনাঞ্চলেই আছে, তবে সংখ্যা খুব বেশি নয়। মধুপুর, সুন্দরবনসহ সিলেটের বিভিন্ন বনাঞ্চল ও চা বাগানে এদের খুঁজে পাওয়া যায়। এরা মাটিতে চরে বেড়ায়। প্রজনন মৌসুমে মাটিতেই বাসা করে। তবে রাতে গাছের উপর উঠে রাত্রিযাপন করে’।

তবে ফাঁদ পেতে এই বনমোরগদের শিকার করা থেকে এদের রক্ষা করতে পারলে আরও ব্যাপক সংখ্যায় এদের প্রজনন ঘটানো সম্ভব হত বলে জানান এই বন্যপ্রাণী গবেষক ড. মনিরুল খান।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ