Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

‘হিমঘরে’ সৌদি-ইসরায়েলের সম্ভাব্য মিত্রতা

সৌদি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১০:০৩, ১৪ অক্টোবর ২০২৩

‘হিমঘরে’ সৌদি-ইসরায়েলের সম্ভাব্য মিত্রতা

যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক নেতা সৌদির সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক মিত্রতা স্থাপনের যে প্রয়াস চলছিল, আল আকসা অঞ্চলে যুদ্ধের জেরে আপাতত তা ‘হিমঘরে’ রয়েছে বলে জানা গেছে।

সৌদির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘনিষ্ঠ দু’টি সূত্রের বরাত দিয়ে শনিবার এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) এবং গাজা ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের মধ্যকার চলমান যুদ্ধের জেরে সঙ্গত কারণেই এই মুহূর্তে নিজেদের আঞ্চলিক কূটনীতি পুনর্বিবেচনা করছে রিয়াদ। তার অংশ হিসেবেই এখন ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ও মিত্রতা স্থাপনের ব্যাপারটি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সূত্র আরও জানিয়েছে, বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আমলে নিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে মিত্রতার পরিবর্তে এখন ইরান ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ট করার চেষ্টা করছে রিয়াদ।

ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া মূলত শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্যোগে। ২০২১ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসন মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ও অংশীদারদের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক ঘনিষ্ট চেষ্টা শুরু করে। এই ধারাবাহিকতায় গত দু’বছরে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিসরের সঙ্গে ইসরায়েলের আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্কও স্থাপিতও হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ও কৌশলগত অংশীদার সৌদি। মধ্যপ্রাচ্যের ইসরায়েলের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতে সৌদির সঙ্গে বিশ্বের একমাত্র এই ইহুদিশাসিত ভূখণ্ডটির মিত্রতা জরুরি ছিল এবং গত বছর থেকে প্রক্রিয়া শুরুও হয়েছিল।

কিন্তু হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলা পুরো পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে। আল আকসা অঞ্চলের সাম্প্রতিক যুদ্ধ, তার প্রতিক্রিয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর ব্যাপক ইসরায়েলবিরোধী অবস্থান এবং সেই সঙ্গে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় ইসরায়েলের সঙ্গে সম্ভাব্য মিত্রতা স্থাপন এই মুহূর্তে ‘খুব জরুরি’ নয় বলে মনে করছে সৌদি। কারণ এই মুহূর্তে এ বিষয়ে এগোলে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে দেশটির যে প্রভাব, তা খর্ব হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ইসলাম ধর্মের জন্মভূমি সৌদি মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র এবং দীর্ঘ বেশ কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মিত্রদের মধ্যে অন্যতম সৌদি আরব।

সম্প্রতি ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে ইসরায়েল-হামাস সংঘাত নিয়ে টেলিফোনে কথা হয়েছে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের। এছাড়া গত ৭ অক্টোবর সংঘাতের সময় থেকেই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও মুক্তিকামী জনগণের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব।

এ ব্যাপারে আরও বিস্তারিত জানতে রিয়াদের কয়েকজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, কিন্তু কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, ইসরায়েলের সঙ্গে মিত্রতা স্থাপনের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয়নি, স্থগিত রয়েছে মাত্র।

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান ওয়াশিংটনে এক বিফ্রিংয়ে এ সম্পর্কে বলেন, ‘(মধ্যপ্রাচ্যের) সব মিত্র ও কৌশলগত অংশীদারদের সঙ্গে ওয়াশিংটন সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। (ইসরায়েলের সঙ্গে মিত্রতা স্থাপনের মাধ্যমে) মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি স্থাপনের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল—তা স্থগিত নেই; তবে সাম্প্রতিক বাস্তব পরিস্থিতিগত কারণে বিষয়টি এই মুহূর্তে আলোচনার কেন্দ্রে অনুপস্থিত।’


চ্যানেল৭৮৬ এর নিউজ রুমে যোগাযোগ করতে ইমেইল করুন এই ঠিকানায়[email protected] । আপনার পণ্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নম্বরে।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ