ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের হামলায় ইসরায়েলে বেশ কয়েকজন মার্কিন নাগরিক নিহত হয়েছেন। রোববার একজন মার্কিন কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তবে এই ঘটনার পর ইসরায়েল উপকূলে বিমানবাহী রণতরী পাঠানোর কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের একজন মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা এএফপি বলেছে, ‘আমরা ইসরায়েলে বেশ কয়েকজন মার্কিন নাগরিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারি। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের এবং ক্ষতিগ্রস্ত সকলের পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা জানাই।’
অবশ্য নিহত মার্কিন নাগরিকদের সঠিক সংখ্যা বা তাদের পরিচয় সম্পর্কে ওই কর্মকর্তা আর কোনও তথ্য দেননি।
এদিকে পৃথক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলেছে, ইসরায়েলে হামাসের হামলায় বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুজন ইউক্রেনের নাগরিক, একজন ফরাসি নাগরিক এবং ১০ জন নেপালি নাগরিক রয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে অন্তত তিনজন আমেরিকানও রয়েছেন বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
এর আগে রোববার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, হামাসের হামলার পরে নিখোঁজ এবং মৃত আমেরিকানদের রিপোর্ট যাচাই করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রোববার ইসরায়েলে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন। আর এটিকে হামাসের ক্রমবর্ধমান হামলার মুখে মিত্র ইসরায়েলের প্রতি ওয়াশিংটনের ‘অটল’ সমর্থনের ইঙ্গিত বলে মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন বলেছে, তারা মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড এবং এর সঙ্গে থাকা অন্য যুদ্ধজাহাজগুলোকে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে পাঠাচ্ছে। এর মাধ্যমে মূলত এই অঞ্চলে ফাইটার এয়ারক্রাফটের সংখ্যা বাড়াতে চাচ্ছে দেশটি।
এদিকে ইসরায়েলের কাছে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী পাঠানোর সিদ্ধান্ত চলমান উত্তেজনার ‘ব্যাপক বৃদ্ধি’ ঘটাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন একজন বিশ্লেষক। আল জাজিরার সিনিয়র রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারার মতে এই অঞ্চলে বিমানবাহী রণতরী পাঠানোর মার্কিন সিদ্ধান্ত বিভ্রান্তিকর এবং উত্তেজনা ‘ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি’ করবে।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, হামাসের হামলার বিরুদ্ধে সমর্থন প্রদর্শনের অংশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র একাধিক সামরিক জাহাজ এবং বিমান ইসরায়েলের কাছাকাছি পাঠাবে।
মারওয়ান বিশারা বলছেন, ‘আমি কৌশলগত সামরিক পরিপ্রেক্ষিতে বুঝতে পারছি না কেন মার্কিন বিমানবাহী রণতরী সেখানে পাঠাতে হবে? এতে প্রায় ৫ হাজার নাবিক এবং বিশ্বের সবচেয়ে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান রয়েছে। ইসরায়েল নিজেই তো গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে সক্ষম।’
তার দাবি, ‘সংঘাতের এই সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে এভাবে সমরাস্ত্র মজুদ করার ধারণা খুবই বিপজ্জনক।’
উল্লেখ্য, মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত শনিবার ভোর থেকে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামের একটি অভিযান শুরু করে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। হামাসের এই অভিযানে কার্যত হতবাক হয়ে পড়েছে ইসরায়েল।
এছাড়া হামাসের হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের সংখ্যা ৭০০ ছাড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে বহু সেনাসদস্যও রয়েছে। এছাড়া হামাসের হামলায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ২২০০ ইসরায়েলি।
অন্যদিকে গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণহানি ছাড়িয়েছে ৪০০।
চ্যানেল৭৮৬ এর নিউজ রুমে যোগাযোগ করতে ইমেইল করুন এই ঠিকানায়[email protected] । আপনার পণ্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নম্বরে।