Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

পেশায় ফিরছেন না অনেক উবার ও লিফট ড্রাইভার

আমেরিকা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:৩৫, ৯ জুলাই ২০২১

পেশায় ফিরছেন না অনেক উবার ও লিফট ড্রাইভার

করোনা মহামারির কারণে গত দেড় বছরে রাষ্ট্রীয় নানা বাধা নিষেধের কারণে মানুষের চলাচল নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছিল। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে করোনা নিয়ন্ত্রণে আসায় মানুষ আবার চলাচল করতে শুরু করেছে। আর রাইডশেয়ারে যাত্রী পরিবহনও বাড়ছে।
কিন্তু উবার এবং লিফটের মতো রাইডশেয়ার কোম্পানিগুলো চালকের অভাবে পড়েছে। চালকদের পুরোপুরি মাত্রায় কাজে ফিরিয়ে আনতে নগদ ইনসেনটিভ দিয়েও কাজে আনতে পারছে না কোম্পানিগুলো। ফলে রাইডশেয়ার গ্রাহকদের দীর্ঘ অপেক্ষা এবং ক্ষেত্রবিশেষে বেশি অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে।
উবার এবং লিফট কয়েক লাখ লোককে এই সার্ভিসের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে রেখেছে। তবে কিছু সাবেক চালক কোম্পানির দেয়া ইনসেনটিভ প্যাকেজের দিকে এখন আর নজর দিচ্ছেন না। তারা বেশি আর্থিক সুবিধা পাওয়ার চেষ্টাও করছেন না। ফলে চালকদের একটি বড় অংশ এখনো রাইডশেয়ার কোম্পানির সার্ভিসের বাইরে রয়েছেন।
রাইডশেয়ার ড্রাইভারস ইউনাইটেডের স্বেচ্ছাসেবক সংগঠক নিকোল মুর সিএনবিসিকে বলেছেন, ‘চালকেরা এক ধরনের ধর্মঘটে রয়েছেন।’
ওয়েডবুশের ড্যান আইভেস এক ই-মেল বার্তায় বলেন, বর্তমানে ৪০ শতাংশ চালকের ঘাটতি রয়েছে। রাইডশেয়ারিংয়ের সাবেক চালকরা বিভিন্ন কারণে রাস্তা থেকে দূরে রয়েছেন।
অনেকের আশঙ্কা মহামারি অব্যাহত থাকলে প্রথমবারের মতো আবার গাড়ি চালানো বন্ধ হয়ে যাবে। তখন তারা আবার বিপদে পড়বেন।
রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মার্কিন জনসংখ্যার ৫০ শতাংশেরও কম লোক কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিয়েছেন। ফলে রাস্তায় বের হলে চালকেরা আবার কোভিড আক্রান্ত হতে পারেনÑ ্টমেন আশঙ্কা করছেন।
টেক্সাসের বাসিন্দা সাবেক রাইডশেয়ার চালক লুই উ সিএনবিসিকে বলেন, ‘মহামারি এখনো শেষ হয়নি, মানুষ এখনো অসুস্থ হতে পারে।’
উবারের মতে, ৮০ শতাংশ চালক একবার টিকা দেওয়ার পরে পেশায় ফিরে আসার পরিকল্পনা করেছিল। লোকজনকে রাস্তায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টার অংশ হিসেবে লোকদের টিকা দেওয়ার জন্য ভ্যাকসিন স্পটগুলোতে যেতে বিনামূল্যে রাইড সরবরাহে কোম্পানিটি গত বছরের জুলাই মাসে প্রচুর পরিমাণে সম্পদ বিনিয়োগ করেছে।

তা সত্ত্বেও অনেক চালক গিগ অর্থনীতিতে থাকতে চান। তবে তারা সংক্রমণের আশঙ্কায় ভীতসন্ত্রস্ত। তাদের অনেকে খাদ্য বা মুদি সরবরাহের দিকে চলে গেছেন। এর ফলে তাদের গাড়িতে কম চাপ পড়ে। বিশেষ করে গ্যাস এবং গাড়ির যন্ত্রাংশের দাম বৃদ্ধির কারণে তারা গাড়ির ওপর তেমন চাপ দিতে চান না।

দ্য রাইডশেয়ার গাই ব্লগ চালানো হ্যারি ক্যাম্পবেল এক ই-মেইলে বলেন, ‘কোভিডের সময়ে, খাদ্য সরবরাহের তুলনায় যাত্রী পরিবহনের সুযোগ অনেক কম ছিল। লোকজন রেস্তোরাঁর কাছাকাছি এলাকা থেকে খাদ্য সরবরাহের অর্ডার দিতেন এবং সেগুলো পৌঁছে দিতে বেশি সময় লাগতো না। অথচ যাত্রী নিয়ে যেতে হলে সপ্তাহে হাজার মাইল কিংবা তারচেয়েও বেশি পথ গাড়ি চালাতে হয়। ফলে চালকরাও ক্লান্ত হয়ে পড়েন।’
আবার কিছু চালক বেকার ভাতা পাওয়ায় কাজে যোগ দিচ্ছে না। এ বছরের শেষ দিক পর্যন্ত তারা বেকারভাতার সুবিধা পাবেন। তবে সাবেক এই চালকেরা শরৎকালে কোম্পানির পক্ষ থেকে সুয়োগসুবিধা বাড়ানোর পর কাজে ফিরে আসতে পারেন।
উবার এবং লিফ্ট বলেছে, তারা ভেবেছিল বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (১ জুলাই থেকে শুরু) রাইডশেয়ারের চাহিদা ও সরবরাহে সমস্যা আর থাকবে না। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা আশানুরূপ হচ্ছে না।

তবে সরবরাহের চেয়ে চাহিদা বেড়ে গেলে তা রাইডশেয়ার কোম্পানিগুলোকে সেবায় আরও মৌলিক পরিবর্তন আনতে বাধ্য করতে পারে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের খবর অনুযায়ী, উবার শিক্ষা এবং কর্মজীবন-তৈরির কর্মসূচির জন্য অর্থায়নের বিবেচনা করছে। ২ জুলাই শুক্রবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, লিফটও ড্রাইভারদের ব্যয় হ্রাস করার উপায় অনুসন্ধান করছে।

তবে অনেক ড্রাইভার গিগ অর্থনীতির বাইরে কাজ করা কেমন তার স্বাদ পেয়েছেন। মুর বলেন, তিনি প্রাক্তন ড্রাইভারদের বেশ কয়েকজনকে চেনেন যারা অফিসের কাজ পেয়েছেন বা সেমি-ট্রাক চালাতে যাচ্ছেন, তাদের ফিরে আসার কোনো ইচ্ছা নেই।
বিশেষত বর্ধিত মূল্য অব্যাহত থাকায় রাইডশেয়ার জায়ান্টরা কীভাবে অর্থ প্রদান করে, তা নিয়ে কিছু গিগ কর্মী ক্রমশ হতাশ হয়ে পড়েছেন।
গত মাসে ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে যে যাত্রীরা উচ্চ হারে অর্থ পরিশোধ করলেও চালকরা তা থেকে লাভবান হচ্ছেন না। বরং চালকরা সংস্থাগুলোকে বার বার বলতে থাকেন যে অ্যাপগুলোতে নির্ভরশীল হয়ে জীবিকা নির্বাহ করা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে কোম্পানিগুলোর প্রথম দিকের তুলনায় দিন দিন পরিস্থিতি কঠিন হচ্ছে।

মুর বলেন, ‘আমি যখন গাড়ি চালানো শুরু করি, তখন আমাকে ৮০ শতাংশ ভাড়ার গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছিল। সেই পরিস্থিতি থাকলে এখনো কিছু ঠিক হতো। কিন্তু রাস্তার পরিস্থিতি ভিন্ন। চালকেরা এখন ২০, ৩০, ৪০ শতাংশ ভাড়া দেখছেন।’


চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ