বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশটিতে বন্দুক হামলা মহামারির রূপ নিয়েছে। স্বাধীনতা দিবসের ছুটিতে তিন দিনে দেশজুড়ে পাঁচ শতাধিক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৩৩ মার্কিন নাগরিক। আর আহত হয়েছেন ৬১৮ জন। তবে সিএনএনের খবরে দাবি করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে গত বছরের ছুটির দিনের তুলনায় এবার বন্দুক সহিংসতা ২৬ শতাংশ কমেছে।
গত বছর একইসময়ে দেশটিতে ৩১৪ প্রাণহানি ও ৭৫১ জন আহত হয়েছিলেন।
নিউইয়র্কে শুক্রবার থেকে রোববার—এই তিন দিনে ২১টি বন্দুক হামলায় হতাহত হয়েছেন ২৬ জন। সেখানকার পুলিশ বলছে, গত বছরের একই সময়ে ২৫টি হামলায় ৩০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।
কেবল ৪ জুলাই নিউইয়র্কে ১২টি বন্দুক হামলায় ১৩ জন আহত হয়েছেন। যা গত বছরের তুলনায় বেশি। তখন আটটি বন্দুক হামলায় আটজন আহত হয়েছিলেন। সার্বিকভাবে ২০২০ সালের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরে নিউইয়র্কে বন্দুক সহিংসতা ৪০ শতাংশ বেড়েছে। গত বছরে ৭৬৭ বন্দুক হামলার ভুক্তভোগী ছিলেন ৮৮৫ জন।
মঙ্গলবার (৬ জুলাই) সকালে গান ভায়োলেন্স আর্কাইভ এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে সোমবার পর্যন্ত বন্দুক সহিংসতার ঘটনার কথা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৫তম স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই নাশকতার আশঙ্কা করেছিল নিরাপত্তা বাহিনী। সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আনতে ছিল পূর্ব প্রস্তুতিও। নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় চলে তল্লাশি অভিযান।
স্বাধীনতা দিবসের আগে অস্ত্রসহ আটক করা হয় বেশ কয়েকজনকে। রোববারের (৪ জুলাই) জাঁকজমকপূর্ণ আতশবাজির ঝলকানির মধ্যেই দেশটির বিভিন্ন স্থানে বন্দুক সহিংসতায় ঝরেছে বহু তাজা প্রাণ।
শিকাগোর পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, রাজ্যটিতে শুক্রবার ভোর থেকে সোমবার পর্যন্ত ১৮ জন নিহত এবং ১০০ জন আহত হয়েছেন। ইলিনয় অঙ্গরাজ্যে মারা গেছেন আরও ১৪ জন। তাদের একজন ইলিনয় আর্মি ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য। তার নাম ক্রিস কার্ভিজাল।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল ব্রাড লাইটন বলেন, ইলিনয় ন্যাশনাল গার্ডে নতুন ছিলেন কার্ভিজাল। তাকে পরিবহন ইউনিটে মোতায়েন করা হয়েছিল। সম্প্রতি তিনি সেনাবাহিনীর মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষ করেন।
এছাড়া কয়েক হাজার লোকের একটি ভিড়কে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার সময় এক ব্যক্তির এলোপাতাড়ি গুলিতে দুই শিকাগো পুলিশ আহত হন। যদিও শহরটিতে গত বছরের তুলনায় হামলার সংখ্যা দুই শতাংশ কমেছে।
ভার্জিনিয়ায় অজ্ঞাত বন্দুকধারীর হামলায় নিহত হয়েছে চার শিশু। বন্দুক সহিংসতা আশঙ্কাজনকহার বেড়ে যাওয়ায় এই সময়টাকে ‘চ্যালেঞ্জিং সপ্তাহ’ বলে আখ্যা দিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।