Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

জ্যামাইকায় ‘লিটল বাংলাদেশ এভিন্যু’

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৮:৪১, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২

জ্যামাইকায় ‘লিটল বাংলাদেশ এভিন্যু’

নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকায় ‘লিটল বাংলাদেশ এভিন্যু’র উদ্বোধন ২১ ফেব্রুয়ারি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে দুপুর দেড়টায় এই নামফলক উম্মোচন করবেন সিটি কাউন্সিলম্যান জেমস এফ জিনারো। নিউইয়র্ক সিটিতে একটি বিশাল এবং চমৎকার কমিউনিটি গড়ে উঠেছে অভিবাসী বাংলাদেশীদের। এখানে বাস করছেন ৩ লাখের অধিক বাংলাদেশি। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল সিটি নিউইয়র্ক। তন্মধ্যে বহুজাতিক এ নগরীরই শুধু নয় কুইন্স গোটা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বৃহত্তম কাউন্টি। কুইন্সের ৪৭ শতাংশ বাসিন্দাই অভিবাসী। বাংলাদেশী অভিবাসীদের একটি বড় অংশের বসবাস কুইন্সের জ্যামাইকায়।

বাংলাদেশী বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ স্থায়ীভাবে বাস করছেন জ্যামাইকা এলাকায়। জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারকে কেন্দ্র করে এখানে বিস্তৃতি ঘটেছে বাংলাদেশী অভিবাসীদের। গড়ে উঠেছে একটি চমৎকার প্রতিবেশ ও পরিবেশ। স্থানীয় হিলসাইড এভিন্যুতে সাটফিনের ১৪৪ স্ট্রিট থেকে ১৭৫ স্ট্রিট পর্যন্ত বিশাল এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশীদের ব্যবসায় বাণিজ্য। বলা চলে এই এলাকা এখন এক টুকরো বাংলাদেশ। আর এই এ্ক টুকরো বাংলাদেশকেই আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষ। জ্যামাইকার হিলসাইড এভিন্যুও ১৪৪স্ট্র্টি থেকে বাংলাদেশী ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্র বিন্দুকে ‘লিটল বাংলাদেশ এভিন্যু’ নামকরণ করা হচ্ছে। বিশেষ করে ১৬৯ স্ট্রিট, হোমলন স্ট্রিট ও হিলসাইড এভিন্যুর সংযোগস্থলটি প্রাধান্য পাচ্ছে এই নামকরণের কেন্দ্র হিসেবে। এর আগে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সামনে ১৬৮ স্ট্রিটটির নামকরণ করা হয় ‘জেএমসি ওয়ে।’

 

নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে নূতন এই নামকরণ হবে ‘লিটল বাংলাদেশ এভিন্যু’। বাংলাদেশী কমিউনিটিকে সম্মান জানাতেই হিলসাইড অ্যাভিনিউ এবং হোমলোন এভিন্যু’র কর্ণার (সাগর চাইনিজ রেস্টুরেন্টের নিকটে) কে নতুন নামে অভিষিক্ত করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে ইতিমধ্যেই নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে একটি বিল (আইএনটি২৪৭৭) পাশ হয়েছে। এটি উত্থাপন করেছিলেন কাউন্সিলম্যান জেমস এফ জিনারো। অন্যান্য কাউন্সিল মেম্বার সমর্থন দিয়েছেন এই প্রস্তাবে। ‘লিটল বাংলাদেশ এভিন্যু’ নামফলক উম্মোচন করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস তথা ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবসের দুপুরে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ‘লিটল বাংলাদেশ অ্যাভিনিউ’র নামফলক আনুষ্ঠানিকভাবে উম্মোচনের তথ্য কাউন্সিলম্যান জেমস জিনারোর অফিস থেকে জানানো হয়েছে। সাউথ এশিয়ান ভয়েসের নেতা মূলধারার বিশিষ্ট এক্টিভিস্ট মোহাম্মদ তুহিন জানান তিনি কাউন্সিলম্যান জিম জিনারো নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ‘লিটল বাংলাদেশ এভিন্যু’ নামে রাস্তার নামকরণসহ অন্যান্য দাবি নিয়ে বার বার মুখোমুখি হন জিম জিনারোর।

 

উল্লেখ্য জ্যামাইকায় লিটল বাংলাদেশ এভিন্যু নামকরণের উদ্যোগটি হঠাৎ করেই গ্রহণ করেননি স্থানীয় কাউন্সিলম্যান জিম জিনারো। জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি সহ স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠন দীর্ঘদিন যাবৎ শহীদ মিনার সহ এধরণের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সিটি কাউন্সিল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে যোগাযোগ করে আসছিলেন। বিভিন্ন সময় স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধিগণ এ বিষয়ে অঙ্গীকারও করেন। কার্যত তারই ধারাবাহিকতার ফল জ্যামাইকা লিটল বাংলাদেশ এভিন্যু। এই অর্জন স্থানীয় জ্যামাইকাবাসী সহ নিউইয়র্ক সিটির গোটা বাংলাদেশী কমিউনিটির। এজন্য কমিউনিটি বিশেষ কৃতজ্ঞতা কাউন্সিলম্যান জিম জিনারোর প্রতি। জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রেসিডেন্ট বিশিষ্ট কমিউনিটি এ্যাক্টিভিস্ট ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার মহতি এ কাজের জন্য জিম জিনারোকে ধন্যবাদ জানান। কমিউনিটির স্বার্থে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে এর চেয়ে অনেক বড় অর্জন সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে নিউইয়র্ক সিটির ১৯৯টি রাস্তার নাম বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও দেশের নামে রি-নেমিং করার খবরটি নিউইয়র্ক সিটির সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয় নিউইয়র্ক সিটির রাস্তার নাম কারো নামে রি-নেমিং করার প্রক্রিয়ায় জটিল। এই জটিলতা প্রধানত আমলাতান্ত্রিক এবং কম্যুনিটি বোর্ডভিত্তিক। যেহেতু বিভিন্ন কম্যুনিটির সদস্য রয়েছে বোর্ডে, তাই সেখানে সর্বসম্মত ভোট পাওয়া খুব সহজ নয়। গত বছর যেহেতু অধিকাংশ সিটি কাউন্সিলম্যান ছিলেন বিদায়ী, সেই সাথে কাউন্সিল স্পিকার কোরি জনসনও, তাই বিদায়ের আগে এই বিলগুলি একযোগে পাশ করা হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ