মারিজুয়ানা, পট বিভিন্ন নামে পরিচিত হলেও গাঁজার নাম শুনেনি এমন মানুষ পাওয়া অসম্ভব। মানব সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষ গাঁজা সেবন করে আসছে ও বর্তমানকালেও এটিকে নিরাপদ মাদক হিসেবে গণ্য করা হয়। কিন্তু গবেষকরা জানান, গাঁজা আপনার হার্টের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
মঙ্গলবারে (৬ সেপ্টেম্বর) কানাডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে বলা হয়েছে যে ৪৫ বছরের নিচের কোন ব্যক্তি যদি বিগত ৩০ দিনের মধ্যে ১ দিনও গাঁজা সেবন করে, তাহলে তার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায়।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ক্যানাবিস স্যাটিভা উদ্ভিদকেই গাঁজা ডাকা হয়ে থাকে। এর মূল কেমিক্যাল টেট্রাহাইড্রোকান্নাবাইনোল বা টিএইচসি।
গবেষকরা ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে ইউএস সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন জরিপে অন্তর্ভুক্ত ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী ৩৩ হাজারেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্কদের স্বাস্থ্য তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। মোট ব্যক্তিদের ১৭ শতাংশ ব্যক্তি একমাসের মধ্যে গাঁজা সেবন করেছেন যারা, তাদের মধ্যে ১ দশমিক ৩ শতাংশ ব্যক্তি পরবর্তীতে হার্ট এটাকের শিকার হয়েছেন।
সেন্ট মাইকেল হাসপাতাল ও কানাডার টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিশিয়ান-বিজ্ঞানী ডাঃ করিম লাধা বলেন, ‘কিছু মানুষ মনে করেন গাঁজা খাওয়া নিরাপদ ও এটি শরীরের ক্ষতি করে না। কিন্তু এটি ভুল ধারণা।‘
তিনি আরো বলেন, ‘এখন নিত্যনতুন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে যা দেখায় যে এটি আপনার স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর।'
লাধা জানান, গবেষণায় এখনো জানা যায়নি যে কিভাবে গাঁজা মানুষের হার্টকে প্রভাবিত করে, কিন্তু প্রভাবিত যে করে সেটি সত্য।
গাঁজা সেবনের পর হৃদস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যায়। যখন কারও হৃদস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যায়, তখন হৃদযন্ত্রের প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের পরিমাণ বেড়ে। যায় একই সময়ে, গাঁজা হৃদয়ে সরবরাহ করা অক্সিজেনের পরিমাণও সীমিত করে দিতে পারে।
লাধা জানান যে অক্সিজেনের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যেকার এই অমিলের কারণেই হার্ট এটাক ঘটে।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রবার্ট পেইজ জানান, বর্তমানে বাজারে যে গাঁজা পাওয়া যায় তা পূর্বের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। অনেক মানুষ জানে না যে গাঁজা অন্য ওষুধের সাথে মিশে খারাপ প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে।
তিনি বলেন, ‘অন্যান্য সব ওষুধের মতো গাঁজাও লিভারের মাধ্যমে পরিপাক করা হয়। এটি বিভিন্ন কার্ডিওভাস্কুলার ওষুধের সংস্পর্শে আসতে পারে ও বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে'।
সেন্ট মাইকেল হসপিটাল ও ইউনিভার্সিটি অফ টরেন্টোর শারীরবিদ্যার অধ্যাপক ডা. ডেভিড মাজার জানান যে গাঁজা ব্যথা উপশম ও অন্যান্য চিকিৎসার কাজে সুফল বয়ে আনলেও এটির নেতিবাচক দিকগুলো উপেক্ষা করা যাবে না।
মাজার বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য গাঁজা ব্যবহারকারী রোগী ও চিকিৎসকের উচিত সব বুঝে শুনে গাঁজা ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা।‘
এএইচএ কোনভাবেই গাঁজা ব্যবহারকে সমর্থন করে না। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, ফুসফুসের প্রদাহ সহ অন্যান্য রোগের সাথে গাঁজার সম্পর্ক থাকতে পারে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।
লাধা জানান, ভবিষ্যতে উনি গাঁজা ব্যবহারকারীদের সরাসরি পর্যবেক্ষণ করে গবেষণা চালাতে চান। আমেরিকার সকল রাজ্যে গাঁজা বৈধ না হওয়ায় এই গবেষণা করাএকটু কঠিন বলে তিনি জানান।
চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।