Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

কোরবানি কখন, কার ওপর ওয়াজিব, পশু কেমন হতে হবে?

মাহমুদ আহমদ

প্রকাশিত: ২২:২৮, ১০ জুন ২০২৪

আপডেট: ২২:৩০, ১০ জুন ২০২৪

কোরবানি কখন, কার ওপর ওয়াজিব, পশু কেমন হতে হবে?

ইসলামের অন্যতম ফজিলতপূর্ণ ইবাদত কোরবানি। প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কের প্রত্যেক মুসলিম নারী-পুরুষ, যে ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে, তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব।

টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজনে আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কোরবানির নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

নেসাব হলো, স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭ দশমিক ৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২ দশমিক ৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে নিসাব হলো- এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া।

সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার ওপর কুরবানি করা ওয়াজিব। (আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫)।

একান্নবর্তী পরিবারের মধ্যে একাধিক ব্যক্তির ওপর কোরবানি ওয়াজিব হওয়ার শর্ত পাওয়া গেলে অর্থাৎ তাদের কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে তাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা কোরবানি করা ওয়াজিব। পরিবারের যত সদস্যের ওপর কোরবানি ওয়াজিব তাদের প্রত্যেককেই একটি করে পশু কোরবানি করতে হবে কিংবা বড় পশুতে পৃথক পৃথক অংশ দিতে হবে। একটি মাত্র কোরবানি সকলের জন্য যথেষ্ট হবে না।

কোরবানির পশু কেমন হবে : ছয় ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি করা যায়। উট, গরু, মহিষ, দুম্বা, ভেড়া ও ছাগল। এর বাইরে অন্য কোনো পশু দিয়ে কোরবানি করার অনুমতি নেই।

ছাগল, ভেড়া ও দুম্বার ক্ষেত্রে কোরবানি করার জন্য শর্ত হলো, বয়স কমপক্ষে এক বছর পূর্ণ হতে হবে। অবশ্য ছয় মাসের ভেড়া যদি মোটাতাজা হয় এবং দেখতে এক বছর বয়সের মতো মনে হয়, তাহলে তা দিয়েই কোরবানি করা যাবে। গরু-মহিষের ক্ষেত্রে শর্ত হলো, দুই বছর পূর্ণ হতে হবে। আর উটের ক্ষেত্রে শর্ত হলো, পাঁচ বছর পূর্ণ হতে হবে। (হিদায়া : ৪/ ১০৩)। 

এক পশুতে কতজন : ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদির ক্ষেত্রে একটি পশু শুধু এক ব্যক্তিই কোরবানি দিতে পারবেন। তাতে একজনের বেশি অংশ নিতে পারবেন না। গরু, মহিষ ও উটে সর্বোচ্চ সাত ব্যক্তি অংশ নিতে পারবেন। এ ব্যাপারে আল্লাহর রাসুল (সা.) হাদিসে বলেছেন, ‘একটি উট ও গরু-মহিষে সাত ব্যক্তি কোরবানির জন্য শরিক হতে পারে। (মুসলিম : ১৩১৮)।

কোরবানির পশু দোষত্রুটিমুক্ত হতে হবে। পশুর যেসব দুর্বলতার কারণে কোরবানি দেওয়া যাবে না, তা হলো—
» অন্ধ
» বধির
» অত্যন্ত দুর্বল ও জীর্ণ-শীর্ণ 
» জবাইয়ের স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে অক্ষম 
» লেজের বেশির ভাগ অংশ কাটা
» জন্মগতভাবে কান না থাকা
» কানের বেশির ভাগ কাটা
» গোড়াসহ শিং উপড়ে যাওয়া
» পাগল হওয়ার কারণে ঘাস-পানি ঠিকমতো না খাওয়া
» বেশির ভাগ দাঁত না থাকা
» রোগের কারণে স্তনের দুধ শুকিয়ে যাওয়া
» ছাগলের দুটি দুধের যেকোনো একটি কাটা হওয়া 
» গরু বা মহিষের চারটি দুধের যেকোনো দুটি কাটা হওয়া

হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘চার ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি জায়েজ হবে না। অন্ধ—যেটার অন্ধত্ব স্পষ্ট, রোগাক্রান্ত—যার রোগ স্পষ্ট, পঙ্গু—যার পঙ্গুত্ব স্পষ্ট এবং আহত—যার কোনো অঙ্গ ভেঙে গেছে।’ (ইবনে মাজাহ: ৩১৪৪)।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ