Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

আমেরিকায় বসে আমেরিকাকে গালি দেওয়া নিমকহারামি : আবু জাফর মাহমুদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:৫৪, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আমেরিকায় বসে আমেরিকাকে গালি দেওয়া নিমকহারামি : আবু জাফর মাহমুদ

বাংলাদেশি শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের প্রত্যয় নিয়ে দুদিনব্যাপী পঞ্চম বাংলাদেশ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের লাগোর্ডিয়া এয়ারপোর্ট ম্যারিয়ট হোটেলে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, গ্লোবাল পিস অ্যাম্বাসেডর এবং অ্যালেগ্রা হোম কেয়ার ও জয়বাংলা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা-সিইও ড. আবু জাফর মাহমুদ। 

আবু জাফর মাহমুদ বলেন, মনে পড়ে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার বিহারীদের কথা। ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় তারা থাকতো। বাংলাদেশের জল-বাতাশ নিয়েও তারা প্রকাশ্যে বাংলাদেশের বিরোধিতা করতো। এখন দেখছি, অনেকেই আমেরিকায় বসে আমেরিকাকে গালি দেয়। এরা তো দেখি সেই বিহারী জাতির মতো। এখন আমাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তাদের প্রশ্রয় দেব নাকি বয়কট করবো। যে রাজনীতি আমাকে আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে ঠেলে দেয়, সেই রাজনীতি আমার নয়। এমন রাজনীতিকে বয়কট করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, যতক্ষণ বাংলাদেশে সম্মেলনের অনুষ্ঠানগুলো দেখলাম, মনে হয়েছে বাংলাদেশের মধ্যেই আছি। যেন মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে আছি। এই যুদ্ধ বাংলাদেশের সমৃদ্ধির যুদ্ধ, বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার যুদ্ধ। এই মুহূর্তে আমার মনে পড়ছে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক আতাউল গণি ওসমানীর কথা। কথা ছিল, স্বাধীন দেশে তিনি থাকবেন পাকিস্তানের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে। কিন্তু তাকে বাধা দেওয়া হলো, মাঝপথ থেকে ফেরত পাঠানো হলো। এটা হলো যুদ্ধের পলিটিক্স। আমরা যুদ্ধে জিতেছি বটে, কিন্তু হেরে গেছি যুদ্ধের পলিটিক্সে।

আবু জাফর মাহমুদ বলেন, আজকের এই বাংলাদেশ সম্মেলন থেকে সর্বপ্রথম বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব ওসমানীকে স্মরণ করছি। স্মরণ করছি সব সেক্টর কমান্ডার, সাব সেক্টর কমান্ডার এবং সব বীর মুক্তিযোদ্ধাকে। স্মরণ করছি, যারা মাতৃভূমির জন্য প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছেন। 

‘আমাদের যারা নেতা কিংবা মুরব্বি, তাদের মধ্যে অনেক বিভাজন আছে। কিন্তু আমরা সেদিকে নজর দিতে চাই না। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ প্রশ্নে আমাদের মধ্যে কোনো বিভাজন নেই। বিশেষকরে আমরা যারা প্রবাসে আছি, তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে যত বাংলাদেশি আছে, আমরা সবাই এক, এক মায়ের সন্তান।’

‘আমরা কেন সেই রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাস করি, যারা আমাদেরকে বিভাজিত করে। আমরা কেন সেই নেতাদের অনুসরণ করি, যারা একজনের পেছনে আরেকজনকে লেলিয়ে দেয়। আমার প্রশ্ন, আমরা কোন দুঃখে তাদের অনুসরণ করি।’

গ্লোবাল পিস অ্যাম্বাসেডর আবু জাফর মাহমুদ বলেন, স্বাধীনতার ৫৫ বছর পরও প্রশ্ন ওঠে, মুক্তিযুদ্ধ কারা করেছিল? এই প্রশ্ন ওঠার সঙ্গত কারণও আছে। কারণ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করা হচ্ছে, অসম্মান করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণরা। আর গেছে দিনমজুর, খেটে খাওয়া গরিব মানুষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তো মুক্তিযুদ্ধে যায়নি, আমলারা তো যায়নি, ব্যবসায়ীররা তো যায়নি। তারা বরং মুক্তিযুদ্ধের সময়ও সরকারের সুবিধা নিয়েছে, বেতন নিয়েছে। জাতির কী দুর্ভাগ্য, সেই তারাই এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সবক দেয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধ আবু জাফর মাহমুদ বলেন, যারা আমেরিকার নামে বিষোদ্গার করেন, তাদেরকে বলে রাখি, আপনি আপনারা বিচ্ছিন্ন কোনো দ্বীপে বসবাস করছেন না। এটা গ্লোবালাইজেশনের যুগ। আমেরিকার শক্তি সম্পর্কে আমরা সবাই ওয়াকিবহাল। অর্বাচীনের মতো কথা বলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিপদে ফেলবেন না। মনে রাখতে হবে, আমাদের দুইটা দেশ—বাংলাদেশ ও আমেরিকা। এই দেশের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে আবার বদনাম করা নিমোকহারামি।

তিনি বলেন, এই বাংলাদেশ কনভেনশন কোনো দলাদলির জায়গা নয়। এটা হোক ভালোবাসার জায়গা, সবাইকে বরণ করার জায়গা। এই সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা একটা বার্তা ছড়িয়ে দিতে চাই যে, আমরা একতাবদ্ধ।


চ্যানেল৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ইমেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পণ্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ