Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

গ্রাজুয়েট ক্লাব ও আমাদের ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:৫০, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২

গ্রাজুয়েট ক্লাব ও আমাদের ভাবনা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে  বলা হয় বাংলাদেশের বাতিঘর। এই দেশটির স্বাধীনতা থেকে শুরু করে যা কিছু ভালো, তার সঙ্গে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। আন্তর্জাতিক অঙ্গণেও বিভিন্নভাবে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে আসছে এই বিশ্ববিদ্যালয়।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্র পরিচালনায় যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন, তেমনি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করে আসছেন। এই ইতিবাচক কর্মকাণ্ড যদি সমষ্টিগতভাবে করা যায় তাহলে সেটা হয়ে ওঠে অনেক বেশি কার্যকর ও ফলপ্রসূ।

 

এই চিন্তা থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট ক্লাব ইউএসএ। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য রাজ্যে কিংবা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই কাজ করে থাকে, এই গ্রাজুয়েট ক্লাব সেভাবেই কাজ করবে।

 

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি বসবাস করছেন নিউইয়র্কে। সঙ্গত কারণেই তুলনামূলকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের পদচারণা এই রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি। সুতরাং এখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট ক্লাব ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারবে। ক্লাবের সদস্যরাও এতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।

 

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে তার সাবেক শিক্ষার্থীরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন।  বিশ্বের প্রথিতযশা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এলামনাইয়ের কর্মকাণ্ডের দিকে নজর রাখলেই তার প্রমাণ পাওয়া যাবে। নিউইয়র্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্যোশাল ও চ্যারিটি এক্টিভিটি করলেও একই ছাতার নিচে না থাকায় সেগুলো ফলপ্রসূ হয়েছে কম।

 

সেই অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসার জন্যই গ্রাজুয়েট ক্লাব গঠন করা হয়েছে। এই ক্লাবের মধ্য দিয়ে সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করতে পারবো বলে  বিশ্বাস করি। এভাবে আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করতে চাই, তাতে সর্বোপরি উজ্জ্বল হবে দেশের মুখ।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট ক্লাবের মাধ্যমে আমরা নিজেদের বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করবো। এই ক্লাবের মেম্বাররা একাডেমিক, নন—একাডেমিকসহ সকল বিষয়ে একে অন্যকে সহযোগিতা করবেন। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের ক্ষেত্রে যেসব সুযোগ—সুবিধা আছে, সেগুলো একে অপরের সঙ্গে শেয়ার করবেন সদস্যরা।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদেরকে অনেক কিছু দিয়েছে। অনেকের জীবনকে আমূল বদলে দিয়েছে। এবার আমরা যখন সাবেক হয়ে গেলাম, তখন আমাদের ঋণ শোধ করার পালা। তাই এই ক্লাবের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কিছু করার চেষ্টা করা হবে। এটা হতে পারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুস্থ শিক্ষার্থীদের জন্য ফান্ড গঠন কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপের জন্য অর্থ সহায়তা।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেসব শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসতে চান, গ্রাজুয়েট ক্লাব তাদেরকেও সহযোগিতা করার চেষ্টা করবে। বিভিন্ন স্কলারশিপের ব্যাপারে তথ্য শেয়ার এবং সুযোগগুলো গ্রহণ করার ক্ষেত্রে ঢাবি শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে ক্লাবের পক্ষ থেকে।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিং নিয়ে ইদানীং খুব কথা হচ্ছে। এ ব্যাপারে এগিয়ে আসবে গ্রাজুয়েট ক্লাবের সদস্যরা। অনেক সঠিক তথ্যের ঘাটতির কারণে নেতিবাচক র‌্যাংকিংয়ের শিকার হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আমরা সেসব বিষয়েও উদ্যোগ নিতে পারি। 

 

গ্রাজুয়েট ক্লাবের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে। বাংলাদেশি কমিউনিটির কল্যাণার্থে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হবে। গরীব ও দুস্থ মানুষের জন্য বিভিন্ন চ্যারিটি কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে। সেটা যেমন এখনকার বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য হতে পারে, তেমনি বাংলাদেশেও চালানো হবে এমন কার্যক্রম। 


মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ