Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

নদী দখল রোধে পবা ও সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের ৭ দফা সুপারিশ

বাংলাদেশ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:০৯, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

নদী দখল রোধে পবা ও সাদাকাহ ফাউন্ডেশনের ৭ দফা সুপারিশ

নদী দখল রোধে ৭ দফা সুপারিশ দিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এবং সাদাকাহ ফাউন্ডেশন ইউএসএ। আজ শুক্রবার ‘নদী দখলমুক্ত করণ প্রক্রিয়ার বর্তমান অবস্থা ও করণীয়’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনায় এসব সুপারিশ তুলে ধরেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান।  

সাত দফা সুপারিশে বলা হয়- ১. অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীর জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দিতে হবে। ২. খাদ্য উৎপাদন টিকিয়ে রাখার জন্য নদীর নাব্যতা রক্ষায় সোচ্চার হতে হবে। ৩. নদীর জায়গায় কোনো স্থাপনা গড়ে তোলা যাবে না। ৪. কঠোর আইনের মাধ্যমে নদীর পানি প্রবাহ সুনিশ্চিত করতে হবে। ৫. সড়ক পথের পাশাপাশি নৌপথের উন্নয়নে জোর দিতে হবে যাতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। ৬. স্বল্প উচ্চতার ব্রিজ চিহ্নিত করে এগুলোর উচ্চতা বাড়াতে হবে। ৭. নদীতে টানেল করে তার সক্ষমতাও বাড়াতে হবে এবং নদীর সীমানা চিহ্নিত করে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে হবে, পাশাপাশি সীমানা চিহ্নিত করতে প্রযুক্তির সহায়তা নিতে হবে।

পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, আমাদের অর্থনীতি, ইকোসিস্টেম, ডেভেলপমেন্ট- পুরোটাই নদীর উপর নির্ভরশীল। সে সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা নেই। বর্ষা, বন্যা এগুলোর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আমরা অনুধাবন করি না। এসব বিষয়াদি না বুঝলে, না জানলে আমরা বাঁচতে পারব না।  তাই অবিলম্বে নদীর সীমানা চিহ্নিত করে, সেগুলো দখল মুক্ত করা জরুরি বলেও মন্তব্য করেন পবা চেয়ারম্যান।

আমন্ত্রিত প্রধান অতিথি হিসেবে নদী কমিশনের সদ্যবিদায়ী চেয়ারম্যান ডক্টর মুজিবর রহমান হাওলাদার বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারি অনেক অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজসে চলে এই নদী দখল। নদী কমিশন ২০১৮-১৯ সালে সারা দেশের দখল হওয়া নদীর এলাকা ও দখলদার চিহ্নিত করে দিয়েছে। এখন ধারাবাহিক ভাবে সেসব দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে স্থানীয় প্রশাসনকে। এ বিষয়ে কারো সাথে কোন আপোষ করা যাবে না বলে সতর্ক করে দিয়েছেন নদী কমিশনের সদ্য বিদায়ী এ চেয়ারম্যান। 

ডক্টর মুজিবর রহমান হাওলাদার আরো বলেছেন, নদী হচ্ছে দেশের উন্নয়নের প্রাণশক্তি, নদীকে বাঁচিয়ে রাখতে না পারলে দেশের উন্নয়ন ব্যহত হবে। তাই সংশোধীত নদী কমিশন আইন ২০২০ এর খসড়া বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ারও পরামর্শ দেন তিনি। 

অনুষ্ঠানে পবার সাধারণ সম্পাদক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুস সোবহান বলেন, পরিবেশ রক্ষা ও নদী দখল বন্ধে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি অত্যন্ত জরুরী। কারণ সরকার দলীয় কিছু অসাধু লোকের কারণে এ ধরনের সংকট চলে আসছে বছরের পর বছর। তাই নদীর প্রবাহ রোধ করে নদী দখলের মত ঘৃন্যকাজ বন্ধের বিষয়ে রাজনৈতিকভাবেও জনগনকে সচেতন করা এখন সময়ের দাবী বলে মনে করেন পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুস সোবহান।

সাদাকাহ ফাউন্ডেশন অব ইউএসএ-এর প্রধান নির্বাহী মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নদী ও জলাশয় দখল, তাই দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী নদী ও জলাশয়কে দখলমুক্ত রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নইলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাবে বাংলাদেশ ভয়াবহ সংকটে পড়ে যাবে, যা থেকে সৃষ্ট দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠা বাংলাদেশের জন্য অনেকটাই কষ্ট সাধ্য হবে।

তিনি সম্প্রতি আমেরিকার নিউইয়র্কে মাত্র ১ ঘন্টার বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় পৃথিবীর এমন উন্নত দেশেও প্রায় ১৮-১৯ জনের মৃত্যুর ঘটনা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জন্য ভাবনার অনুসঙ্গ বলে মন্তব্য করেছেন। বিদেশে থেকেও দেশের জন্য প্রবাসীরা কাজ করছেন উল্লেখ করে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, প্রয়োজনে পরিবেশ রক্ষায় দেশের তৃণমূল পর্যায়েও তারা আরো কাজ করবেন। 

কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইকবাল হোসেন বলেছেন, নদী দখল এখনো বন্ধ করতে না পারলে নতুন প্রজন্মকে একসময় নদীর শুধু গল্পই শোনাতে হবে। আর কঠিন বিপর্যয়ে পড়বে দেশ। 

সাংবাদিক সিকদার নজরুল ইসলাম বলেছেন, উন্নয়নের প্রয়োজনে খাল নদীর ওপর বিভিন্ন অবকাঠামো ব্রিজ কালভার্ট সেতু নির্মান করা হচ্ছে। কিন্তু সেখানে অবশ্যই দেখতে হবে পরিবেশ রক্ষা করতে, নদী রক্ষা করতে বিকল্প কিছু করা যেত কিনা। মূলকথা হলে নদীর দখল বন্ধ করতে সোচ্চার হতে হবে সবাইকে।  ওয়েবিনারে এম এম বাদশাহ’র সঞ্চালনায় কী নোট উপস্থাপন করেন মোহসীন কবির।


চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ