Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

অর্ধলাখ রোহিঙ্গার মাঝে বাসমাহর কোরবানির গোশত বিতরণ

বাংলাদেশ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:০৬, ২৪ জুলাই ২০২১

আপডেট: ২৩:৩৪, ২৫ জুলাই ২০২১

অর্ধলাখ রোহিঙ্গার মাঝে বাসমাহর কোরবানির গোশত বিতরণ

নিজ দেশ মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবনে স্বাভাবিকভাবেই ঈদ বিশেষ কোনো আনন্দ নিয়ে হাজির হয় না। সম্পূর্ণ অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সঙ্গে যোগ হয়েছে আর্থিক টানাপোড়েন। দাতাদের সাহায্যে কোনোরকমভাবে চলছে যে জীবন, সেখানে আলাদা করে কোরবানি দেওয়ার চিন্তা করা তো অসম্ভব।

নিজ দেশে রোহিঙ্গাদের অনেকেই ছিলেন স্বচ্ছল। নিজে কোরবানি দিয়ে প্রতিবেশীদের মাঝে বণ্টন করতেন বর্তমানে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া অনেক রোহিঙ্গা। কিন্তু ভাগ্যের ফেরে তারা আজ কপর্দকশূন্য। এবারের ঈদুল আজহায় এমন দুর্ভাগা রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন দাতা সংস্থা। তার মধ্যে আলাদা করে বলা যায় ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশ এবং বাসমাহ ফাউন্ডেশনের কথা।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে বরাবরের মতোই অসহায় ও দুস্থ মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে আসছে দেশ-বিদেশে অত্যন্ত সুপরিচিত চ্যারিটি সংস্থা বাসমাহ ফাউন্ডেশন। সেই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছরের মতো এবারও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাঝে কোরবানির গোশত বিতরণ করা হয়েছে। ঈদের দিন এবং তার পরের দুই দিন, অর্থাৎ মোট ৩ দিন ধরে চলেছে কর্মযজ্ঞ।

কোরবানির গোশত বিতরণের এই প্রকল্পের মাধ্যমে এবার অর্ধলাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর হাতে গোশত তুলে দেওয়া হয়েছে। পরিবারের হিসেবে এই সংখ্যা ১০ হাজার। প্রতি প্যাকেটে ছিল দেড় কেজি কোরবনির গোশত। জবাই করা হয়েছে ৯৬টি গরু এবং ৬০টি খাসি। এবারের এই আয়োজন আগের বছরগুলোর তুলনায় অনেক বড়।

২০১৭ সালে এমন মহৎ উদ্যোগ শুরু করেছিল বাসমাহ ফাউন্ডেশন। এরপর প্রতি বছরই বেড়েছে এর কলেবর। সেই ধারাবাহিকতায় গত বছর রোহিঙ্গাদের সাহায্যার্থে ৪০টি গরু এবং ২০টি খাসি কোরবানি করা হয়েছিল। এবার সেটা বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে- ৯৬টি গরু এবং ৬০টি খাসি। ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আর বাড়বে বলে প্রত্যাশা কর্তৃপক্ষের।

কোরবানির গোশত বিতরণের এই মূল কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ২৬ নং ক্যাম্পে। এছাড়া আরও বিতরণ করা হয়েছে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহে। শরণার্থী ক্যাম্পে এই কার্যক্রম পরিচালনায় সার্বিক সহায়তা করেছে বাংলাদেশ সরকারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়।

চ্যানেল ৭৮৬ এর সঙ্গে আলাপচারিতায় বাসমাহ ফাউন্ডেশনের মিডিয়া ম্যানেজার কায়েস আহমেদ বলেছেন, এমন একটি কর্মসূচি সুন্দরভাবে সম্পন্ন হওয়ায় কৃতজ্ঞতা জানাই নিভৃতে থাকা সকল শুভাকাক্সক্ষীদের। বিশেষ কৃতজ্ঞতা বাসমাহ ইউএসএ-এর সিইও মীর হোসেনের প্রতি। তার সীমাহীন চেষ্টা, ত্যাগ আর নির্দেশনার ফলে এই আয়োজন সফল হয়েছে।

বাসমাহ ফাউন্ডেশনের বিশাল এই কর্মযজ্ঞের ‘নেপথ্য নায়ক’ হিসেবে ভ‚মিকা রাখছেন শত শত ডোনার। ৯৯ শতাংশ ডোনারই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের। মাত্র ১ শতাংশ ডোনার আছেন বাংলাদেশের। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকাণ্ডের স্বচ্ছতা এর গ্রহণযোগ্যতাকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে।

বাসমাহ ইউএসএ-এর সিইও মীর হোসেন বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও দুস্থ মানুষের হাতে কোরবানির গোশত পৌঁছে দিতে পেরেছি, এটা ভীষণ আনন্দ আর ভালোলাগার ব্যাপার। এজন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। দেশে-বিদেশে আমাদের দাতা যারা আছেন, তাদের প্রত্যেকের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। আশাকরি, তারা সবসময় বাসমাহর পাশে থাকবেন।

বাংলাদেশ সরকারের শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার তো বটেই, বিভিন্ন দেশের সরকারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য কোরবানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এর মধ্যেই দারুণ ভ‚মিকা পালন করেছে দাতা সংস্থাগুলো। ভবিষ্যতেও তারা রোহিঙ্গাদের পাশে থাকবে, সেই প্রত্যাশা করছি।


চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ