চীনের পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক দপ্তর পেন্টাগন ও কংগ্রেস সদস্যরা। বেইজিং নতুন করে আরও ১১০টি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকেন্দ্র নির্মাণ করছে, এমন তথ্য সামনে আসার পর গত সোমবার উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র। আজ বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান ফেডারেশন অব সায়েন্টিস্ট (এএফএস) গত সোমবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলের হামি এলাকার কাছে এসব ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকেন্দ্র (সাইলো) নির্মাণ করা হয়েছে। স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে এই তথ্য জানিয়েছে এএফএস। এর কয়েক সপ্তাহ আগেই দেশটির মরু এলাকা ইউমেনে ১২০টি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকেন্দ্র নির্মাণের খবর প্রকাশিত হয়।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্র্যাটেজিক কমান্ড সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারে একটি পোস্ট করেছে। সেখানে তারা এএফএসের প্রতিবেদন নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের একটি খবর সংযুক্ত করেছে। ওই টুইট বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, দুই মাসের মধ্যে চীনে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকেন্দ্র নির্মাণের খবর পাওয়া গেল। এটি বিশ্বকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর চীনের পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত বাড়ানোর পদক্ষেপকে উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, বেইজিং পারমাণবিক অস্ত্র সীমিতকরণের দীর্ঘদিনের নীতি থেকে দূরে সরে আসছে। অস্ত্র প্রতিযোগিতা উসকে দেওয়ার ঝুঁকি কমাতে চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।
চীন ‘নজিরবিহীনভাবে’ পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত করছে বলে উল্লেখ করেছেন রিপাবলিকান পার্টির সদস্য মাইক টার্নার। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের হুমকি দেওয়ার জন্য অস্ত্রগুলো মোতায়েন করা হচ্ছে বলে স্পষ্ট করেছে চীন। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চীনের আলোচনা প্রত্যাখ্যান করা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উদ্বেগের কারণ। এদিকে চীনের পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত বৃদ্ধির ফলে যুক্তরাষ্ট্রেরও পারমাণবিক অস্ত্রের আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন রিপাবলিকান পার্টির আরেক সদস্য মাইক রজার্স।
২০২০ সালে পেন্টাগনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের ২০০টির মতো পারমাণবিক বোমার মজুত রয়েছে। তবে বেইজিং তাদের সামরিক শক্তি আধুনিকায়নে পদক্ষেপ নিয়েছে। এ কারণে এই মজুত দ্বিগুণ করা হতে পারে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিশ্লেষকদের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৩ হাজার ৮০০ পারমাণবিক বোমা রয়েছে। এর মধ্যে ১ মার্চ পর্যন্ত মোতায়েন রয়েছে ১ হাজার ৩৫৭টি বোমা।
এদিকে গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যানের চীনে দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে চীনকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিপজ্জনক নীতি ও বিপথগামী মানসিকতা পরিবর্তনের জন্য আহ্বান জানানো হয়। বৈঠকে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, চীনকে একটি কাল্পনিক শত্রু হিসেবে দেখছে ওয়াশিংটন। ফলে দুই দেশের সম্পর্কে ‘অচলাবস্থা’ চলছে। দুই দেশ ‘মারাত্মক সমস্যার’ মুখোমুখি হচ্ছে।
শেরম্যানের সফরের প্রাক্কালেও চীনকে আক্রমণাত্মক মনোভাব প্রদর্শন করতে দেখা যায়। শেরম্যানের চীনে পৌঁছানোর এক দিন আগে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, কীভাবে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে আচরণ করতে হয়, সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে শিক্ষা দেওয়া হবে। ওয়াং আরও বলেন, চীন কোনো দেশের স্বঘোষিত শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নেবে না।
চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।