Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

অরেগনে দাবানল বাড়ছে, পুড়ে গেছে ৩ লাখ একরেরও বেশি জমি

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৩:৩৫, ২১ জুলাই ২০২১

অরেগনে দাবানল বাড়ছে, পুড়ে গেছে ৩ লাখ একরেরও বেশি জমি

অরেগন অঙ্গরাজ্যে দেশের এখন সবচেয়ে সক্রিয় দাবানলটিতে ৩ লাখ একরেরও বেশি জমি পুড়ে গেছে। দাবানলের কারণে হাজার হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

প্রায় ২০০০ এরও অধিক দমকলকর্মী ‘বুটলেগ ফায়ার’ নামক দাবানলটির মোকাবেলা করছে। দাবানলটিকে অরেগনের ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ দাবানল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

আগুনটি জুলাই মাসের ৬ তারিখে শুরু হয়। ইতোমধ্যে এটি লস এঞ্জেলস শহরের চেয়ে বেশি বড় আকার ধারণ করেছে।

বর্তমানে দেশ জুড়ে চলতে থাকা ৮০টি বড় দাবানলের মধ্যে এটি অন্যতম। বর্তমানে পুরো দেশের ১৩টি রাজ্যজুড়ে ৮০টি বড় দাবানল চলছে। এইসব দাবানল তৈরির পিছে হিট ওয়েব ও প্রবল বাতাসকে দায়ী করা হচ্ছে।

দাবানলটিকে বুটলেগ ফায়ার নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। মূলত, দাবানলটির পাশেই অবস্থিত ‘বুটলেগ স্প্রিংস’ নামক ঝর্ণার নামে দাবানলটির নামকরণ করা হয়েছে। দাবানলটি ইতোমধ্যে ১৬০টিরও অধিক ভবন ও বাড়ি ধ্বংস করেছে। দাবানলটি প্রায় দুই হাজারের মতো মানুষকে তাদের বাড়ি-ঘর ছাড়তে বাধ্য করেছে। 

কর্তৃপক্ষ জানায় যে আগুনটির এক চতুর্থাংশ নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে।

রবিবারে (১৮ জুলাই) অপারেশন সেকশন চিফ জন ফ্ল্যানিগান বলেন ‘আবহাওয়া আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করছে। গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ার পাশাপাশি অস্থিতিশীল বাতাসের কারণে তাপ দ্রুত গতিতে বাড়ছে।‘

এই সপ্তাহের আবহাওয়া আগুন নিভানোর কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। এই সপ্তাহে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ১০-১৫ ডিগ্রি বেশি বৃদ্ধি পেতে পারে। এর পাশাপাশি খরাও দেখা যেতে পারে।

আগুনটি পোর্টল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্বদিকে ৪৮০কিঃমিঃ জায়গাজুড়ে জ্বলছে। ইতোমধ্যে এটি ১৬০টির অধিক ভবন ধ্বংস করেছে ও আরও শত শত ভবন ধ্বংস করার সম্ভাবনা রাখে।  

ক্লামাথ ফলস ও রেডমন্ড সহ কয়েকটি শহরের বাসিন্দাদের জন্য  দুটি আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে।

ন্যাশনাল ইন্টারেজেন্সি ফায়ার সেন্টারের মতে, এই বছরে দেশের ১২ লাখ একর জমি দাবানলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশিরভাগ দাবানলই পশ্চিমদিকের রাজ্যগুলোতে ঘটেছে।

সংস্থাটির হিসাবমতে, ২০২১ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত আমেরিকাতে  চার হাজারের বেশি দাবানলের ঘটনা ঘটেছে। সংখ্যাটি ২০২০ সালের মোট দাবানলের সংখ্যার দ্বিগুণ।

শুধুমাত্র ক্যালিফোর্নিয়ায়, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি একর জমি পুড়ে গেছে।

ধারণা করা হচ্ছে যে, রাজ্যটিতে সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া ‘ডিক্সি ফায়ার’ নামক দাবানলের পিছনে ‘পিজি অ্যান্ড ই’ নামক একটি ইউটিলিটি ফার্ম দায়ী। উল্লেখ্য যে, এই একই ফার্মের কারণে ২০১৮ সালে রাজ্যটিতে ‘ক্যাম্প ফায়ার’ নামক দাবানলের সৃষ্টি হয়েছিলো। ‘ক্যাম্প ফায়ার’ দাবানলটি ক্যালিফোর্নিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক দাবানল হিসেবে কুখ্যাত।

আমেরিকার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশ কানাডাতেও দাবানলের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কানাডিয়ান ইন্টারেজেন্সি ফরেস্ট ফায়ার সেন্টার জানায়, কানাডাতে বিগত সপ্তাহেই ১৫০ এর অধিক নতুন দাবানলের সৃষ্টি হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা জানায়,  বহু বছর ধরে চলা খরার কারণে ২০২১ সালে উত্তর আমেরিকায় দাবানলের সংখ্যা পূর্বের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বৃদ্ধি পাবে।

বিজ্ঞানীদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শুষ্ক ও গরম আবহাওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এই শুষ্ক ও গরম আবহাওয়ার কারণে দাবানলের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।  

শিল্প যুগ শুরু হওয়ার পর থেকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ইতোমধ্যে ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়েছে। যদি বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের সরকার যদি গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমন কমাতে না পারে, তাহলে এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতেই থাকবে।


চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ