Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

ভ্যাকসিন নিলেও করোনাক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৯:১০, ২৫ জুলাই ২০২১

ভ্যাকসিন নিলেও করোনাক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা

এদিকে সিডিসি ডাইরেক্টর রচেল ওয়ালেনেস্কি বলেছেন যে, বর্তমানে কোভিড আক্রান্তদের ৮৩ শতাংশই ডেল্টা ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত এবং দুই সপ্তাহ আগের চেয়ে এখন আক্রান্ত হার ৩৩ শতাংশ বেড়েছে।

তিনি আরো বলেছেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড সংশ্লিষ্ট মৃত্যুর ৯৯.৫ শতাংশই যারা ভ্যাকসিন নেননি তাদের মধ্য থেকে। এছাড়া রাইপার্টিসান পলিসি সেন্টার ও ডিপার্টমেন্ট অফ হেলথ এন্ড হিউম্যান সার্ভিসেস এর সাবেক ডেপুটি অ্যাসিষ্ট্যান্ট সেক্রেটারী ড.আনন্দ পারেখ বলেছেন, আমেরিকান দক্ষিণ-পূর্ব, দক্ষিণ ও পার্বত্য স্টেটগুলোতে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের সংক্রমণ অধিক এবং তা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ ওই এলাকাগুলোতে ভ্যাকসিনেশন হার সামান্য, সংক্রমিত রোগীর চিকিৎসার সুযোগ কম, এমনকি অনেক এলাকায় লোকজন করোনা ভাইরাসের টেষ্ট পর্যন্ত করাতে রাজি নয়। ফলে যারা টেস্ট করছে পজেটিভ হার উচ্চ, হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও বেশি। মেয়ো ক্লিনিকের মতে, এখন যেসব স্টেট কোভিড ১৯ এর হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত সেগুলো হচ্ছে; আরকানসাস, মিজৌরি ও ফ্লোরিডা। বর্তমানে কোভিড আক্রান্তে প্রায় ২০ শতাংশই ফ্লোরিডার। ড. পারেখ বলেছেন, জাতীয়ভাবে গত জুন মাসের চেয়ে কোভিড আক্রান্ত সংখ্যা তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়ে সাত দিনে গড়ে ৩০ হাজার কোভিড আক্রান্ত হয়েছে এবং হাসপাতালে ভর্তি সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভ্যাকসিনেশন ছাড়া ভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধের বিকল্প নেই এবং মাস্ক পরিধান করার প্রশ্নটিও গুরুত্বপূর্ণ।

কিন্তু ভ্যকসিন সম্পর্কে অনেক মানুষের মনে বিভ্রান্তিরও সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আমেরিকান ভ্যাকসিন নিতে এগিয়ে আসছেন না। যেসব আমেরিকান এখনো ভ্যাকসিন নেননি, তারা ভ্যাকসিন না নেয়ার অবস্থানে এখনো অটল আছেন বলেই মনে হয়। ইয়াহু নিউজ/ইউগভ এর সাম্প্রতিক এক জরিপে অংশগ্রহণকারী ১,৭১৫ জন প্রাপ্তবয়স্ক আমেরিকানের মধ্যে মাত্র ২৯ শতাংশ মনে করেন যে ভ্যাকসিনের চেয়ে ভাইরাস বিপজ্জনক; অপরদিকে ৩৭ শতাংশ বিশ্বাস করেন যে ভ্যাকসিন নেয়ার মধ্যে ঝুঁকি অধিক। আনন্দ পারেখ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, শেষপর্যন্ত প্রতিটি আমেরিকান ভ্যাকসিন নেয়ার পক্ষে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি বলেন, আমেরিকায় আমাদের সামনে দুটি বাস্তবতা রয়েছে। একটি যারা ভ্যাকসিন নিয়েছেন ও ডেল্টা ভেরিয়েন্ট থেকে নিরাপদ তাদের জন্য, আরেকটি হলো, যারা ভ্যাকসিন না নিয়ে এমন এক হুমকির মধ্যে আছেন, যে অভিজ্ঞতা তাদের আগে কখনো হয়নি। আমরা এক বছর আগে যে ভাইরাস দেখেছি, ডেল্টা ভেরিয়্যান্ট তা নয়, বরং এটি উচ্চ সংক্রামক এবং এই ভাইরাসে আক্রান্তের অবস্থা অধিক শোচনীয় অবস্থায় নিয়ে যাবে।

ড. আনন্দ পারেখ সুস্থ মানুষকেও মাস্ক পরিধানের আবশ্যকতা সম্পর্কে বলেছেন যে, মাস্ক পরিধানের কারণে সংক্রমণে বাধা সৃষ্টি হয় এবং যারা মাস্ক ধারণ করছেন তারা নিজেরা নিরাপদ থাকার পাশাপাশি করোনার বিস্তার রোধেও ভূমিকা রাখেন। বহু স্থানে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে শিথিল করা বিধিনিষেধ, বিশেষ করে মাস্ক পরিধান করাকে বাধ্যতামূলক করেছে, যার মধ্যে রয়েছে জনবহুল স্টেট ক্যালিফোর্নিয়ার লস এঞ্জেলেস ও স্যান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়া। কোন ভ্যাকসিনই ১০০ শতাংশ কার্যকর নয় এবং যদিও ভ্যাকসিন নেয়ার পর আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটে, তাহলে তা খুব কম ক্ষেত্রে ঘটে এবং সংক্রমণ ঘাতক না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে আবারও বাড়তে শুরু করেছে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার। যারা টিকা নেয়নি, তারা আক্রান্ত হচ্ছে উদ্বেগজনক হারে। হোয়াইট হাউজ গভীর উদ্বেগের সাথে গত ১৬ জুলাই বলেছে, টিকা গ্রহণে অনীহা পরিহার করতে হবে নিজে এবং স্বজনের স্বাস্থ্য সুরক্ষার্থে। সিডিসি’র (সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এ্যান্ড প্রিভেনশন) পরিচালক ড. রচেলে ওয়ালেনস্কি গত ১৬ জুলাই ব্রিফিংকালে জানান, গত সাতদিনের ব্যবধানে করোনায় আক্রান্তের হার ৭০% বেড়ে গত ১৫ জুলাই দাঁড়ায় ২৬৩০০ জনে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি বেড়েছে ৩৬% এবং গত সাতদিনে দৈনিক গড়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ২৭৯০ জন। একইভাবে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ২৬% বেড়ে দৈনিক গড়ে ২১১ জন হয়েছে।

এছাড়াও বেশ কয়েক সপ্তাহ আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা একেবারেই কমে যাবার পর হঠাৎ করেই তা বাড়তে শুরু করেছে। সিডিসি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে, যেসব এলাকার মানুষ টিকা নেয়নি, তারাই আক্রান্ত হচ্ছে। অর্থাৎ স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্যে কর্তৃপক্ষের সকল প্রয়াসকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে টিকা নিতে অনীহা প্রকাশকারিরা। সিডিসির পরিচালক ক্যাটাগরিকেলি উল্লেখ করেছেন, ‘টিকা না নেয়ার খেসারত দিচ্ছে পুরো আমেরিকা। গত এক মাসে বাড়তে বাড়তে তা এখন ৫০টি স্টেটেই বিস্তৃত হয়েছে। ওয়ালেনস্কি আরও উল্লেখ করেছেন, ডেল্টার ভয়ংকর রূপ বিপর্যস্ত করতে যাচ্ছে। তাই এখনও সময় আছে সকলের টিকা গ্রহণের। টিকা না নিলেই আক্রান্ত হবার আশংকা থাকবে। সিডিসি আশা করছে যারা এখনও টিকা নেয়নি, অবিলম্বে তারা তা গ্রহণ করবে। মোট ১৬ কোটি ৪ লাখ আমেরিকান পূর্ণ ডোজের টিকা নিয়েছেন গত ১৫ জুলাই পর্যন্ত। অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার ৪৮%। অবশিষ্ঠ ৫২% এর মধ্যে ১০% বয়স ১২ বছরের কম। অর্থাৎ টিকা গ্রহণের উপযোগী আরও ৪০% কে টিকা দেয়া সম্ভব না হলে সারা আমেরিকা আবারও মহামারির কবলে পড়তে পারে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন।

উল্লেখ্য, টিকা নিতে এখন এপয়েন্টমেন্টের প্রয়োজন হচ্ছে না। নিজ নিজ চিকিৎসকের মাধ্যমেই তা নেওয়া যাচ্ছে। এমনকি ব্যস্ততম এলাকা, পার্ক, রেল স্টেশনেও টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। সকল হাসপাতালে টিকা দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ ইচ্ছা করলেই টিকা নিতে পারেন মার্কিনিরা।


চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ