বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশন ও কর্মকর্তারা মামলায় আতঙ্কিত। নির্বাচন দ্রুত করার জন্য নয়ন-আলী পরিষদের তাগিদ। তারা চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন, ট্রাস্টিবোর্ড ও কার্যকরী কমিটিকে। দুই সপ্তাহ পর তাদের সাংবাদিক সম্মেলন। এদিকে নির্বাচন কমিশন এক মতবিনিময় সভা ডেকেছে ১৭ আগস্ট। সোসাইটির কার্যলয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। অতীতে যারা সোসাইটিকে সার্ভ করেছেন ও সংবিধান প্রণয়নের সাথে জড়িত ছিলেন তারাই এ বৈঠকে আমন্ত্রিত। তারা হলেন নার্গিস আহমেদ, এড. মজিবুর রহমান, ফজলে রাব্বি, ডা. মঈনুল ইসলাম মিয়া, ডা. ওয়াদুদ ভূঁইয়া, খান টিপু সুলতান, মোহাম্মদ হোসেন খান, ফখরুল আলম, আজমল হোসেন কুনু ও জামান তপন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার জামাল আহমেদ জনি বলেন, এদের বাইরেও কমিউনিটির অনেকে আছেন। তাদের সাথে আমরা যোগাযোগ রাখছি। কথা বলছি। প্রয়োজন হলে ভবিষ্যতে তাদের সাথেও আনুষ্ঠানিকভাবে বসবো। ‘গত ৩ মাস ধরেইতো আপনারা এ ধরনের বৈঠক করছেন। কোন কিনারা পেয়েছেন?’ জবাবে জনাব জনি বলেন, আমরা দ্বার প্রান্তে। সর্বশেষ বৈঠক হবে মিডিয়ার সাথে। তখনই নির্বাচনের ভবিষ্যত জানানো হবে। তবে এর আগে মামলার চূড়ান্ত রায় পেলেতো সোনায় সোহাগা। কমিশনের অপর সদস্য আব্দুল হাকিম আজকালের প্রশ্নের জবাবে বলেন, সংগঠনের পয়সা যাতে অপচয় না হয় সেজন্যই আমরা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছি। পরিবেশ তৈরি হলেই নির্বাচন।
নয়ন আলী পরিষদের সভাপতি প্রার্থী কাজি নয়ন আজকালকে বলেন, নির্বাচনের কোন আইনী বাধা না নেই। কোথায় কি হচ্ছে তা নির্বাচন কমিশনের দেখবার বিষয় নয়। তাদের প্রধান ও পবিত্র দায়িত্ব হলো নির্বাচনের আয়োজন করা। মনে রাখতে হবে তারা কোন নির্বাচিত বডি নয়। তাদেরকে সোসাইটি মনোনিত করেছে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য। অন্যকিছু মাথায় আনা সময় ক্ষেপনের পরিচায়ক।
এদিকে সোসাইটির বর্তমান কমিটি ও কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ অভিযোগ উঠছে ক্ষমতা ধরে রাখার। কমিশন এ অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের অভিমত, নির্বাচনের মতো এ ধরনের কোন বড় কর্মসূচি হাতে নিলে বিশাল অংকের অর্থের দরকার হয়। কিন্তু অনুষ্ঠানের আগের দিন ইনজাংশন বা স্টে অর্ডার এলে সবকিছই স্থগিত হয়ে যায়। বড় একটি অংক গচ্চা যায় সংগঠনের। ২০১৯ সালে সোসাইটির নির্বাচনের আগের দিন কোর্ট থেকে স্টে অর্ডার আসে। স্থগিত হয়ে যায় নির্বাচন। অথচ সোসাইটির নির্বাচন ও অন্যান্য প্রস্তুতিতে ইতোমধ্যেই খরচ হয় ৭০ হাজার ডলার। বর্তমানে নির্বাচনের কোন আইনী বাধা না থাকলেও ভবিষ্যতে আবার কোন মামলায় পড়তে হয় কিনা এমন আতংক ও আশংকার কথা বলছেন নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান কমিটির নেতারা। সমালোচকরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের ভাষায়, কমিশন ও কমিটির নেতারা নেতৃত্ব ও ক্ষমতা আরও দীর্ঘায়িত করার জন্য নানা অজুহাত আনছেন। মামলার ভয়ে সংগঠন বসে থাকতে পারে না। কোর্টে গিয়ে বিচার চাওয়া সবার মৌলিক অধিকার।
বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয়েছে দেড় বছর আগে। করোনার কারনে নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার জামাল আহমেদ জনি আজকালকে বলেন, কারা মামলা করেছেন তা সবাই জানেন। তারা একটি প্যানেলের সদস্য। এই প্যানেলের নেতারাই দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছেন। তাদের প্যানেলের ২ জন সদস্যকে দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করে নিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। কালকেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা সম্ভব। এ ধরনের সমস্যায় তৃতীয় পক্ষগুলোকে এগিয়ে আসতে হয়। অতীতেও সোসাইটির নির্বাচনে মামলা হয়েছে। আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে তা নিরসন হয়েছে। আর তা না হলে মামলার চূড়ান্ত নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বসে থাকতে হবে।
কাজি আশরাফ নয়ন বলেন, ওসমান চৌধুরী ও রব্বানীর দায়ের করা মামলা চলছে। তবে নির্বাচনে তো কোন বাধা নেই। এখনই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হোক। ২৭ হাজার ৫’শ ভোটার উদগ্রীব হয়ে আছেন নির্বাচনের জন্য। অপর প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী আব্দুর রব মিয়া গত নির্বাচন কমিশনের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বলেছেন, সব মামলা নিষ্পত্তি পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এখনও প্যানডেমিক শেষ হয়নি। সাড়ে ২৭ হাজার ভোটার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে। সবকিছু বিবেচনা করে নির্বাচনের ঘোষণা দিন। রব-রুহুল প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ও সোসাইটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিনও তার প্যানেলের সভাপতির সুরে কথা বলেছেন।
এসব কথা শুনে সোসাইটির একজন প্রবীন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকালকে বলেন, সংগঠনটিতে মামলার ভূত পেয়ে বসেছে। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে আমাদের।
চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।