
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে মার্কিন সেনাদের চালানো ড্রোন হামলায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) একজন পরিকল্পনাকারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় দ্য ইউএস মিলিটারি।
আফগানিস্তানের নানগারহার প্রদেশে আইএস-কে গ্রুপের এই সদস্যের উপর আক্রমণ চালানো হয়েছে।
এর আগে আইএস-কে বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) কাবুল এয়ারপোর্টের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলার দায় স্বীকার করে নেয়। এতে ১৩ মার্কিন সেনাসহ ১৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
চলতি মাসে তালেবান কাবুলের দখল নেওয়ার পর থেকেই আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের উদ্ধার অভিযান চলছে কাবুল এয়ারপোর্টে।
গত দুই সপ্তাহে আফগানিস্তান থেকে ১ লাখ বাসিন্দাকে উদ্ধার করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সেনাদের নিয়ে ৩১ আগস্ট মঙ্গলবার আফগানিস্তান ত্যাগ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুক্রবার (২৭ আগস্ট) এক বিবৃতিতে জানান, কাবুল এয়ারপোর্টের আত্মঘাতী হামলায় যেসব 'জিহাদী' জড়িত, তাদের অবশ্যই ধরা হবে।
আইএস-কে বা ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রভিন্স হচ্ছে আফগানিস্তানের সবচেয়ে উগ্র এবং চরমপন্থী জিহাদী দল।
কাবুল এয়ারপোর্টের বাইরের এই বিস্ফোরণে নারী, পুরুষ ও শিশুর মৃত্যু হয়। আফগানিস্তানের প্রায় কয়েক ডজন নাগরিকের মৃত্যু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের সাথে দুই ব্রিটিশ নাগরিক ও এক ব্রিটিশ নাগরিকদের শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার বাইডেন বলেন, 'আমরা ক্ষমা করবো না। আমরা ভুলবোও না। আমরা তোমাদের খুঁজে বের করে এর যথোপযুক্ত শাস্তি দিবো'।
আসন্ন দিনে কাবুলে আরো হামলার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এখনো কাবুল এয়ারপোর্টে যুক্তরাষ্ট্রের ৫ হাজার সেনা মজুদ আছে। যারা আফগানিস্তান থেকে অন্যত্র সরে যেতে চাইছে, তাদের উদ্ধারে এসব সেনারা কাজ করে যাচ্ছে।
কাবুল দায়িত্বরত সেনাদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জানান, 'আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যারা আফগানিস্তান ছেড়ে যেতে প্রস্তুত, তাদের নিরাপদে উদ্ধার করা হবে'৷
তালেবান কর্মকর্তারা জানান, কাবুল এয়ারপোর্টের কিছু স্থানের নিয়ন্ত্রণ তাদের সেনারা নিয়েছে। তবে ইউএস ফোর্স জানায়, এখনো কাবুল এয়ারপোর্টের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি তাদের হাতে রয়েছে৷
তবে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, আমেরিকান ও ব্রিটেনের সৈন্যরা গোছগাছ শুরু করেছে এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তালেবান কাবুল এয়ারপোর্টের নিয়ন্ত্রণ নিতে প্রস্তুত আছে।
ন্যাটোভুক্ত বেশিরভাগ দেশই তাদের ইমার্জেন্সি ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে। ফ্রান্স এয়ারপোর্টে নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে শুক্রবার তাদের উদ্ধার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তাদের চালানো ড্রোন হামলায় কোনো বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়নি। বৃহস্পতিবার কাবুলে বিস্ফোরণের পর এটিই পাল্টা হামলা।
সেন্ট্রাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন বিল আর্বান জানান, আমরা নানগারহারে এয়ারস্ট্রাইক হামলা চালিয়েছি। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে বুঝতে পেরেছি আমরা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পেরেছি। এই হামলায় বেসামরিক কারো মৃত্যু হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের আরেক কর্মকর্তারা জানান, আইএসের একজন সদস্যকে লক্ষ্য করে এই ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, মধ্যপ্রাচ্য থেকে একটি রিপার ড্রোন দিয়ে হামলা চালানো হয়। ড্রোনটি আইএসের সদস্যকে বহন কারী গাড়িতে আঘাত হানে। এতে চালকসহ এই আইএস সদস্যের মৃত্যু হয়।
ধারণা করা হচ্ছে, নানগারহার প্রদেশে আইএস-কের হাজার হাজার সদস্য লুকিয়ে আছে।
আমেরিকার কর্মকর্তারা কাবুল এয়ারপোর্টের বাইরে মার্কিনীদের জমায়েত না করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এর কারণ সম্ভাব্য হামলার শঙ্কা আছে।
পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, কাবুল এয়ারপোর্টে আবার হামলা হবে এমন সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে ও এই সম্পর্কিত তথ্য রয়েছে।
তিনি বলেন, 'ভবিষ্যতের যেকোনো হামলা প্রতিহত করতে আমরা প্রস্তুত আছি'।
চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।